পুবের কলম প্রতিবেদক : বারাসত লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন ডা. কাকলি ঘোষ দস্তিদার। সফল চিকিৎসক থেকে সফল সাংসদ। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুসরণ করে তিনিও মনে করেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। তাই তিনি যেমন দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ছটপুজোয় অংশ নেন, আবার মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে রমযানে ইফতারেও অংশ নেন। তিনি নিজেও প্রতি বছর রমযান মাসে আয়োজন করেন ইফতার মজলিশ। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই রমযানে কোথাও না কোথাও তাঁর ইফতারের দাওয়াত থাকে। সেসব অনুষ্ঠানে তাঁকে রমযান মাসের মাহাত্ম্য নিয়েও বক্তব্য পেশ করতে শোনা যায়। তাঁর কাছে রমযান মাসের অনুভূতিটা কেমন? উত্তরে ডা. ককলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, রমযান ইসলামের পবিত্রতম মাস।
এই মাসে আল্লাহর নির্দেশিত পথে সংযম ব্রত পালন করলে সর্বময় সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভ করা যায়। তাই ইসলামের অনুসারীরা ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা মনে করে, বিরাট অনুশাসন ও কৃচ্ছ্বসাধনের মাধ্যমে রোযা পালন করে থাকেন। এটা দেখে সত্যিই অবাক লাগে এই তীব্র গীষ্ণে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কী করে তাঁরা আহার-পানীয় ত্যাগ করে থাকেন। নিজের উপর যথেষ্ট কন্ট্রোল না থাকলে এটা সম্ভব হত না। যদিও, ছোটবেলা থেকেই মুসলিমদের এই অভ্যাসের চর্চা চলে। আর তখন থেকেই রোযা রাখার জন্য মানসিক দৃঢ়তা গড়ে ওঠে। একজন মুসলমান সারা দিন নিষ্ঠার সঙ্গে রোযা রেখে নিজেকে নিজেই প্রমাণ করেন আমি কতটা কষ্ট সহ্য করতে পারি।
আমার মনে হয়, এই কৃচ্ছ্বসাধনের মাধ্যমে নিজের সত্ত্বাকেই যেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে সমর্পন করা হয়। আমি জানি, লোভ, কামনা, বাসনা ত্যাগ করাও রোযার আর এক দিক, শুধু খাদ্য, পানীয় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বর্জন নয়, এর থেকে সারা বছরের জন্য জীবনযাপনের পথ নির্ধারণ করতে হয়। রমযান যেমন মানুষের যাবতীয় খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে শিক্ষা দেয়, আবার দুঃখী-দরিদ্র মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতেও শেখায়। এই মহৎ কাজগুলি কেবল এক মাসে সীমাবদ্ধ না রেখে ইসলাম সারা বছর, সারা জীবনের জন্য পাথেয় করতে বলেছে। সত্যি কথা বলতে, এই নির্দেশনা কতজনই বা মেনে চলতে পারেন? যদি চলতে পারেন, তাহলে সমাজের জন্য ব্যাপক কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসতে পারে।