মাওলানা আবদুল মান্নান : আত্মিক উৎকর্ষ সাধনের অনন্য উপায় ‘কিয়ামুল্ লাইল’ শধের অর্থ রাতে নামাযের জন্য দাঁড়ানো। মহান আল্লাহ্ তাঁর বিশ্বাসী বান্দাহ্দের সারা বছরের নেকি বা পুণ্যের ঘাটতি পূরণের সূবর্ণ সুযোগ দিয়েছেন রমযান মাসে। নবী করীম সা. রমযান মাসে অন্য মাসগুলোর চেয়ে বেশি ইবাদাত তো করতেনই, সেইসঙ্গে বিশেষ কিছু ইবাদতের প্রাবল্য ও তাঁর মধ্যে দেখা যেত। রাতের নামাযের পরে ‘তারাবিহ্’, এর নামাযের প্রতি তিনি বিশেষ যত্নবান ছিলেন। আর তাহাজ্জুতের নামায তো তাঁর জন্য অবশ্য করণীয় ছিল।
হযরত আবদুলল্লাহ ইনে সালাম রা. বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সা. মদীনায় আগমনের পর তাঁর পবিত্র জবান দিয়ে প্রথম কথাগুলো শুনিয়েছিলেনঃ ‘হে মানবসকল। তোমরা ইসলামের প্রচার ও প্রসার করো, মানুষকে আহার দান করো, আত্মীয়তা অটুট রাখো। আর রাতে মানুষ ঘুমিয়ে পড়লে তোমরা উঠে নামায পড়তে থাকবে। তাহলেই তোমরা নিরাপদে জান্নাতে যাবে।’ (তিরমিযী)
নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কুরআন ঘোষিত হয়েছে , ‘সেদিন সাবধানীরা থাকবে প্রস্রবণবিশিষ্ট জান্নাতে, উপভোগ করবে তা যা তাদের প্রতিপালক তাদের দেবেন। কারণ, পার্থিব জীবনে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। তারা রাত্রির সামান্য অংশই নিদ্রায় অতিবাহিত করত, রাত্রির শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত।’ (সূরা যারিয়াত, আয়াতঃ ১৫-১৮)
তারাবিহ্ঃ আরবি শব্দ, অর্থ বসা, বিশ্রাম করা আরাম করা। শরীয়াতের পরিভাষায় রমযানে এশার নামায পড়ার পর অতিরিক্ত ২০ রাকাত সুন্নাত নামাযকে তারাবিহ্ নামায বলে। এই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামায আদায়ের মাঝে প্রতি দুই রাকায়াত বা চার রাকায়াত অন্তর দোয়া- দরূদ, পড়ার মাধ্যমে একটু বিশ্রাম করতে হয়। নবী করীম সা. বলেনঃ ‘মহান আল্লাহ্তায়ালা রমযান মাসের রাতে দাঁড়ানো। (তারাবিহ্ নমায আদায় করাকে) অতীব পুণ্যের কাজ নির্ধারণ করেছেন।’
নবী করীব সা. আরও বলেনঃ ‘যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সঙ্গে পুণ্য লাভের অদম্য স্পৃহায় তারাবিহ্ নামায আদায় করে তার পূর্বের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (হাদীস) । নবী করীম সা. বলেন , ‘তারাবীহ নামায আল্লাহ্ এত বেশি পছন্দ করেন যে, আমার ভয় হচ্ছিল হয়তো তা আমার উম্মাতের জন্য ফরয করে দেওয়া হবে। ফরয না করেও আল্লাহ্ ফরযের সমান সওয়াব এতে দান করেছেন।’