পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ১৪ বছর বয়সি এক দলিত খ্রিস্টান কিশোরের মৃত্যু নিয়ে লুকোছাপা পুলিশের। গয়াতে অ্যাসিড আক্রমণের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগের তীর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর দিকে। কিন্তু পুলিশ সে কথা স্বীকার করছে না। একে নিছক আত্মহত্যা বলে উড়িয়ে দিতে চাইছে। তাই এই খ্রিস্টান কিশোরের মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে ক্রমশ। নীতীশ কুমার নামে ওই কিশোর রবিবার পাটনার একটি হাসপাতালে মারা গিযেüছে। গয়া বা পাটনা পুলিশ কেউই মামলা দায়ের করেনি। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে গেরুয়া ষড়যন্ত্রকারী এবং স্থানীয় লোকদের দীর্ঘদিনের হুমকির অভিযোগ ছিল।
অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র নীতীশ কুমার গত ১১ আগস্ট রাস্তায় অ্যাসিড আক্রান্ত হন। নিহতের স্থানীয় থানাটি আবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতেন রাম মাঝির গ্রাম মাহকারে– যার হিন্দুস্তানি আওম মাোর্চা সেকুলারও ক্ষমতাসীন এনডিএর অংশ।একজন পুলিশ কর্মকর্তার মত– মৃত্যুটি আত্মহত্যা।একজন চিকিৎসক বলছিলেন যে পরিবারটি আইনগতভাবে বিষয়টি নিয়ে ’উচ্চবাচ্য’ করতে চায় না। কারণ দেহ পচে যাওয়া রোধ করার জন্য দ্রুত দাফন করা দরকার। এই উচ্চবাচ্য না করাটাই সন্দেহের।
কী কারণে দলিত কিশোরের পরিবারটি ভয় পাচ্ছে? কেনই বা লাশের ময়নাতদন্ত হচ্ছে না– উঠছে প্রশ্ন। ছেলেটি যখন হাসপাতালে তার জীবনের জন্য লড়াই করছিল তখন সাংবাদিকরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। পরিবার কথা বলতে রাজি হয়নি। প্রকৃতপক্ষে– আত্মীয়রা এর প্রতিক্রিয়া দিতে এতটাই আতঙ্কিত ছিল যে তারা তাদের ধর্ম নিয়েও আলোচনা করতেও অস্বীকার করেছিল। নীতীশ মারা যাওয়া পরই তারা সংবাদপত্রের সঙ্গে কথা বলেছে। ছেলের বাবা কামতা নগর গ্রামের রিকশাচালক ভাকিল রবিদাস প্রায় পাঁচ বছর আগে তার পরিবারের সঙ্গে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানান– হিন্দুত্ববাদী কর্মীদের মধ্যে কজন তাদের গির্জায় যাতায়াতের বিরুদ্ধে হুমকি দেয়।
অথচ পুলিশ অ্যাসিড হামলার আগে বা পরে মামলা করতে অস্বীকার করেছে। মাহকারের স্টেশন হাউস অফিসারের (এসএইচও) সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তার নাম প্রকাশ করতে অস্বীকার করেন এবং বলেন যে ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে।তিনি জানান– আমরা অনুসন্ধান চালিয়েছি। এটা পারিবারিক কলহের ফল। ও লম্বা চুল রেখেছিল এবং তার বড় ভাইরা জোর করে এটি কেটে ফেলেছিল। ক্ষুব্ধ হয়ে সে নিজের গায়ে আগুন দেয় এবং পুড়ে যায় । নীতীশের বড় ভাই রাজীব কুমার এ বিষয়ে বলেন– এটি সত্য নয়। কিছু লোক তার দিকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছিল। আমরা একটি এফআইআর নথিভুক্ত করতে চেযেüছিলাম এবং থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ সাহায্য করেনি। কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদী এর আগেও এলাকার খ্রিস্টানদের পথরোধ করে গির্জায় যেতে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ। এই অ্যাসিড নিক্ষেপও তাদেরই কাজ বলে দাবি করছে নিহতের পরিবার।