পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : শুক্রবারই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে গোয়ায় যাননি। এক কদম এগিয়ে শনিবার মমতা জানালেন, গোয়ার মানুষই গোয়া শাসন করবে। অর্থাৎ তৃণমূল গোয়ায় ক্ষমতায় এলে, ভূমিপুত্র বা ভূমিকন্যাই হবেন শাসক। ২০২৪-এ তিনি কী বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসেবে নিজেকে প্রজেক্ট করবেন? এই প্রশ্নেরও উত্তর দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, “আমি স্ট্রিট ফাইটার ভিভিআইপি রাজনীতিবিদ নই।”
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে ‘ভূমিপুত্র’ কার্ড খেলেছিলেন অমিত শাহ। বিজেপি শাসিত গোয়ায় গিয়েও একই কৌশল নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবার ফের একবার কংগ্রেসকে তুলোধনা করেন মমতা। অভিযোগ করেন, বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের জন্যই মোদী শক্তিশালী হয়েছে। সুযোগ পেয়েও কংগ্রেস কিছু করতে পারেনি। কেন্দ্রের শাসককে তৃণমূল সুপ্রিমো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন,”দিল্লির দাদাগিরি চলবে না”। তাঁর দাবি, বিজেপির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দলগুলোকে জোটবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে।
মমতার অভিযোগ কংগ্রেস-বিজেপি সমঝোতা করেছে। কিন্তু তৃণমূল কখনও কংগ্রেসের মতো করে লড়াই করবে না। বাংলার বাইরে রাজনৈতিক জমি শক্ত করতে তৃণমূল যে গোয়ার মতো রাজ্যকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন মমতা। মমতা বলেন, আজকে মোদিজির এই একাধিপত্যের পিছনেও রয়েছে কংগ্রেস। তাদের কারণেই তিনি এমন শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অক্ষমতা এবং দল সম্পর্কে সিরিয়াস না হওয়ার কারণে বিজেপি শক্তিশালী হয়েছে।
এদিন গোয়ায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। তাঁদের হাতে পতাকা তুলে দিয়ে মমতা বলেন, “গোয়ার সঙ্গে বাংলার মিল রয়েছে। আমরা এবার গোয়াকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি। গোয়ায় মৎস্যজীবী, ট্যাক্সি চালকরা সমস্যায় রয়েছেন। এখানে কর্মসংস্থান নেই। আমি গোয়ার মানুষের পাশে রয়েছি।”
দ্বীপরাজ্যে রাজনৈতিক লড়াইয়ের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। তার ব্লু-প্রিন্ট রেডি। তিনদিনের গোয়া সফর শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তা প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । স্পষ্ট জানালেন, ভোট ভাগাভাগি হতে দেওয়া যাবে না। গোয়ায় বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট বেঁধেই লড়বে তৃণমূল । একইসঙ্গে কংগ্রেস ও বিজেপিকে একহাত নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ সফর সেরেই তিনদিনের জন্য গোয়া উড়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দিনভর সেখানে একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেন। সাংবাদিক সম্মেলনের পাশাপাশি সেখানকার স্থানীয় মানুষজন, মৎস্যজীবীদের সঙ্গে জনসংযোগ করেন। ঘুরে দেখেন গোয়ার ঐতিহ্যবাহী মন্দির, গির্জাগুলি। মাছ-ফুটবল-লোকসংস্কৃতিতে বাংলা আর গোয়াকে একসারিতে বসিয়ে মমতা জানিয়েছিলেন, বাংলার মতোই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে গোয়াকেও। এখানেও বাংলার মতো ‘দুয়ারে সরকার’, ‘গতিধারা’ প্রকল্প চালুর আশ্বাস দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।