পুবের কলম প্রতিবেদক: বর্তমানে সন্তান প্রসব করানোর ক্ষেত্রে বেশিরভাগই চিকিৎসকরা সিজার পদ্ধতিকেই বেছে নিচ্ছে। মায়েরাও এই পদ্ধতিতে আগ্রহী হচ্ছে, কষ্ট কম হওয়ার জন্য। কিন্তু এই পদ্ধতি আদৌ স্বাস্থ্যকর হচ্ছে না সদ্যোজাত ও মায়ের জন্য। সিজারিয়ান বেবিদের ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে নানান সমস্যা। তাই এবার সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে অহেতুক সিজারের সংখ্যা কমাতে অডিটের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে এই বিষয় নির্দেশিকা প্রকাশ করে হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।
নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব জনস্বাস্থ্যের নিরিখে উদ্বেগজনক।
২০১৫ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সমীক্ষা অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন শিশুমৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রে সিজারের কোনও অবদান নেই। তাহলে ১০-১৫ শতাংশের বেশি সিজারের হার কেন? ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের (৫) সমীক্ষা অনুযায়ী সারা দেশে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার ১৭-২১ শতাংশ।
পশ্চিমবঙ্গে সেই হার সর্বোচ্চ। শুধু সরকারি ক্ষেত্রে এই হার ৩৪ শতাংশ। বেসরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তা দ্বিগুণ। আর সে জন্যই সিজার করলে কোন পরিস্থিতিতে সিজার এবার থেকে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে স্ত্রী রোগ চিকিৎসকদের।
এদিকে বিভিন্নমহলে মনে করা করা হচ্ছে স্বাভাবিক প্রসব প্রক্রিয়াকে ব্রাত্য করে সিজার বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের ঝোঁককে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশিকা। চিকিৎসাশাস্ত্রের সঙ্গে জড়িত অনেকের মতে, নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ প্রতি হাসপাতালে মাসে ক’টি সন্তান প্রসব করা হল তার টার্গেট রয়েছে। টার্গেট পূরণে সিজারে জোর দেওয়ার কথা নির্দেশিকাতেই বলা রয়েছে। তাই বর্তমানে বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারি হাসপাতালেও সিজারের বাড়বাড়ন্ত। এই অবস্থায় কিভাবে এই নির্দেশিকাকে মান্যতা দিয়ে ‘টার্গেট’ পূরণ করা যাবে তা নিয়ে ধন্দে চিকিৎসক মহলের একাংশ।