পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মিটেছে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব, এবার প্রচারের পালা। তারপর ভোট হবে রাজ্যে। সেই ভোটে তৃণমূলের হয়ে প্রচারে নামছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই প্রচার শুরু হবে উত্তরবঙ্গের বুক থেকে। বলতে গেলে বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক রাজ্য গড়ার ডাক দেওয়া এলাকা থেকেই রাজ্যের উন্নয়ন ও ঐক্য-সংহতির বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে আজ রবিবার বিকালেই উত্তরবঙ্গে পৌঁছে যাবেন মমতা। তারপর সোমবার সকালে সভা করবেন কোচবিহারের মাটিতে। বলতে গেলে রাজ্য রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের গড় হিসাবেই চিহ্নিত কোচবিহার থেকেই মাঠে নামবেন মমতা।
জানা গিয়েছে, আগামীকাল সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার চান্দামারিতে প্রাণনাথ হাইস্কুলের মাঠে প্রথম বড় নির্বাচনী জনসভা হবে। কোচবিহারের সভা সেরে পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারেও যেতে পারেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। মঙ্গলবার তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন বলে খবর। কোচবিহারে সভার আগে রবিবার রাতে এবং সোমবার আলিপুরদুয়ারে সভার পরে রাতে দলের নেতাদের নিয়ে ২টি পৃথক পৃথক বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে দলের নেতাদের নিয়ে রণকৌশল ঠিক করা নিয়েও কথা হতে পারে বলে খবর।
বলা হচ্ছে জেলায় জেলায় দলের অবস্থা নিয়ে তৃণমূলের অ¨রে পর্যালোচনা হয়েছে। অন্যদিকে, উনিশের লোকসভা ভোটের নিরিখে দেখতে গেলে কোচবিহার জেলার ৩৪টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে ৩০টিতেই এগিয়ে আছে বিরোধী দল বিজেপি। তবে একুশের বিধানসভার ভোটের পরিসংখ্যান ধরলে ২৬টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তারা। এই অবস্থায় বিজেপি চেষ্টা করছে জেলা পরিষদ দখল করার। তৃণমূলও চাইছে ক্ষমতা দখল করতে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সিটের হিসাবে দেখতে গেলে জেলায় বিজেপি ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৫০৭টি আসনের মধ্যে ২১০৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। জেলার ১২টি পঞ্চায়েত সমিতির ৩৮৩ আসনের মধ্যে বিজেপির প্রার্থী রয়েছে ৩৪৭টি আসনে। আর জেলা পরিষদের ৩৪টি আসনের মধ্যে ৩৩টিতেই প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। শাসক দল তৃণমূল সব আসনেই লড়ছে। ভোটের ময়দানে রয়েছে বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থীরাও। সবমিলিয়ে লড়াই বেশ জমে উঠেছে। সেই লড়াইয়ে জিতে আসার জন্য তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অক্সিজেন দেবেন মমতা।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় তৃণমূল ঝড়ে হারিয়ে গিয়েছিল বিরোধীরা। জেলা পরিষদ ছাড়াও কোচবিহারের সব পঞ্চায়েত সমিতিও দখল করেছিল তৃণমূল। জেলার মাত্র ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়তে পেরেছিল বিরোধীরা। কিন্তু সেই ছবিটাই বদলে যায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। একুশের ভোটেও একই ছবি বজায় ছিল। জেলার ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৭টিতেই জয়ের মুখ দেখে বিজেপি। তৃণমূল পায় মাত্র ২টি আসন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়েই এবার পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই করতে নামছে তৃণমূল। কোচবিহার দেশের মধ্যে একমাত্র জেলা যেখানে তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এদের একটা বড় অংশই রাজবংশী। নিশীথ নিজেও সেই সম্প্রদায়ের। সবাই বর্তমানে কোচবিহারকে নিশীথ প্রামাণিকের গড় বলেই জানে।