আবদুল ওদুদ: আন্তর্জাতিক বিশ্বে পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে প্রথম সারিতে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার কোটি টাকা পোশাক বিদেশে রফতানি হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতিক কাঠামো অনেকটাই চাঙ্গা হয় এই পোশাক শিল্পের জন্য। তবুও বাংলাদেশিদের পোশাকের জন্য পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অনেকটাই ভরসা। ঈদ এলেই বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ রয়েছেন যাঁরা কেনাকাটা করতে কলকাতায় ভিড় জমান। পুবের কলম-এর পক্ষ থেকে নিউ মার্কেট চত্বরে হাজির হয়েছিলেন এই প্রতিবেদক। অনেক বাংলাদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাতে উঠেছে বাংলাদেশে পোশাক সর্ম্পকে নানা কথা। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের পোশাকের দাম কলকাতার তুলনায় অনেকটাই বেশি। আর ঈদ এলেই কলকাতায় ভিড় জমান বাংলাদেশের অনেকে। আনোয়ার হোসেন সিমুল এসেছেন ঢাকা থেকে। পেশায় ব্যবসায়ী। কলকাতায় মাঝে মধ্যেই আসেন। এবারও এসেছেন চিকিৎসা করাতে। তিনি বলেন, চিকিৎসা এবং ঈদের বাজার দুটোই হয়ে যাবে এবার। বাংলাদেশে প্রচুর পরিমানে পোশাক উৎপাদন হলেও কেন কলকাতায় কেনা-কাটা? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় জিনিস পত্রের দাম অকেটাই বেশি। তার মধ্যে পোশাকও রয়েছে। তাই চেষ্টা করেন ঈদের কেনাকাটা কলকাতা থেকে করতে। এতে অনেক টাকা সাশ্রয় হয়।
শফিক আলম কাজ করেন ঢাকার এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি এসেছেন কেনা-কাটা করার জন্য। শফিক বলেন, বাংলাদেশে যে সমস্ত পোশাক তৈরি হয় তার বেশিরভাগটাই চলে যায় বিদেশে। গুনগত মান প্রথম শ্রেণীর। বাংলাদেশের যাঁরা মধ্যবিত্ত তাঁরা এই সমস্ত পোশাক ক্রয় করতে পারেনা। তবে কলকাতায় আসতে ‘রচ হলেও এখনকার পোশাক নাগালের মধ্যে মেলে। তাই প্রতিবছর চেষ্টা করেন নিউ মার্কেট চত্বর থেকে কেনা-কাটা করতে।
বাংলাদেশ থেকে এসেছেন শফিনুর বেগম পলি। সঙ্গে তাঁর মেয়েকেও নিয়ে এসেছেন নিউমার্কেট চত্বরে অনেক টাকার কেনা-কাটা করেছেন। বাজার কলকাতা শপিং মলের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, এই যে ব্যাগ দেখছেন এটা যদি ঢাকায় কিনতাম তাহলে ১ লক্ষ টাকার মতো খরচ হত। কিন্তু আমি এখানে তার অর্ধেক টাকাতে কিনতে পেরেছি। পরিবার আত্মীয় স্বজন সকলের জন্য আমায় কিনতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন প্রসাধনী সামগ্রীও কিনতে হয়েছে। বাংলাদেশে ভারতের মতো প্রসাধন সামগ্রী পাওয়া গেলেও দাম একটু চড়া। তাই কলকাতা থেকে এই সামগ্রী কিনেছেন।
জান্নাতুন নেসা নামে আরও এক মহিলা জানান, কলকাতায় এলেই চেষ্টা করেন এক বছরের প্রসাধনী কিনেন। প্রতিবছরই আসেন কলকাতাতে মাঝে আসতে পারেননি। এবার এসেছেন। সাইফুল ইসলাম সুমন এসেছেন কিশোর গঞ্জ থেকে। ২০১৯ সালে শেষ বারের মতো এসে ছিলেন, কিন্তু করোনাকালে তাঁর আসা হয়নি। এবার কলকাতা থেকে ঈদের বাজার করে নিয়ে ঢাকা ফিরতে চান। তিনিও বাংলাদেশের দ্রব্য মূল্য কলকাতার থেকে অনেকটাই চড়া, সেকথাও তিনি স্বীকার করে নেন। বর্তমানে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী নিউমার্কেট চত্বর ওপার বাংলার ক্রেতাদের জন্য জমে উঠেছে। আরও কয়েকদিন সেই দৃশ্য দেখা যাবে ওই চত্বরে।