পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : মন্ত্রী পুত্রের গাড়ির চাকার কৃষক মৃত্যুর ঘটনায় এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর পদত্যাগ ও গ্রেফতারির দাবিতে ‘রেল রোকো’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা। তবে এই আন্দোলন রুখতে ইতিমধ্যেই লখনউয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি-র তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, সোমবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে রেল অবরোধ। চলবে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। কিন্তু পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং পশ্চিম-উত্তরপ্রদেশের কিছু এলাকায় তার আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় অবরোধ। প্রায় ৪০টি স্থানে রেল লাইন অবরোধ করেন কৃষকেরা। উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কৃষক হত্যার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের গ্রেফতারির দাবি তোলেন তাঁরা। পাশাপাশি, কৃষি আইন বাতিলেরও দাবি তোলেন।
পুলিশ কমিশনারের জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে, যারা দেশবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লখনউতে কৃষক ইউনিয়ন নেতাদের বাড়ির বাইরেও পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। লখনৌ পুলিশ জানিয়েছে যে কেউ যদি স্বাভাবিক পরিস্থিতি ব্যাহত করার চেষ্টা করে তবে কঠোর জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) প্রয়োগ করা হবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে।
কৃষক আন্দোলনকারীদের অবরোধের জেরে পঞ্জাবের ফিরোজপুর-লুধিয়ানা, ফিরোজপুর-ফাজিলিকা শাখায় রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তর রেল জানাচ্ছে, ভিওয়ানি-রেওয়ারি, সিরসা-রেওয়ারি, লোহারু-হিসার, সিরসা-ভাতিন্ডার মতো বেশ কিছু শাখায় অবরোধের কারণে ট্রেন চলেনি। চণ্ডীগড়-ফিরোজপুর এক্সপ্রেস অবরোধে আটকে পড়েছে।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সোমবার অভিযোগ করেছেন যে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রকে বরখাস্ত না করে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই মন্ত্রী-পুত্র আশীষ মিশ্রকে ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরি হিংসার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
কৃষকদের রেল অবরোধ আন্দোলন ব্যর্থ করতে উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার। নির্দেশ আমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইনে’ মামলা রুজু করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারি অমান্য করে সোমবার সকালে বিভিন্ন এলাকায় রেললাইনে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
এদিনের কৃষক প্রতিবাদে প্রায় ১৬০ টি ট্রেনের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়েছে। জানা গিয়েছে ৬৩ টি ট্রেন স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই থামতে বাধ্য হয়। বাতিল হয় ৪৩ টি ট্রেন। ৫০ টি ট্রেন আংশিক বাতিল করা হয়। একটি ট্রেন ঘুরপথে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।