শুভ্রজ্যোতি ঘোষঃ যতদিন ডার্বি থাকবে ততদিন বোধহয় নিজের আক্ষেপ মেটাতে পারবেন না ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার সুমিত পাসি। বড় ম্যাচে আত্মঘাতী গোল? এই আত্মঘাতী গোলটাই যে ইস্টবেঙ্গলের সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াল।
পুরো ম্যাচ ভালো খেলে শুধুমাত্র এই গোলের জন্যেই এটিকে মোহনবাগানের কাছে হারতে হল ইস্টবেঙ্গলকে। আড়াই বছরেরও বেশি সময় পরে যুবভারতীতে ডার্বি। স্বাভাবিকভাবেই তাই রবিবাসরীয় বিকেলে যুবভারতীতে যেন উৎসবের পরিবেশ। কানায় কানায় পূর্ণ যুবভারতী। এমন ভরা যুবভারতীতে দুটো দলই দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিল।
ডুরান্ড কাপে নক আউটের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে জেতা ছাড়া দুই দলের কাছে কোনও বিকল্প পথ খোলা ছিল না। তাই এটিকে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল দুটো দলই জেতার জন্য ছিল মরিয়া। এটিকে মোহনবাগান ভারী দল, তাই এই ম্যাচে প্রথম একাদশে চার বিদেশি নামালেন ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন।
জুয়ান ফেরান্দোও চার বিদেশিতে প্রথম একাদশ সাজিয়েছিলেন। প্রথমার্ধে এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণ অনেকটা বেশিই ছিল। তবে সবটাই ইস্টবেঙ্গল ডি বক্সের কাছে গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছিল। ম্যাচের ১৫ মিনিটে বাঁদিক থেকে আশিক কুরানিয়ার দুর্দান্ত মুভ সত্ত্বেও গোলের কাছে এসে সাইড নেটে মারলেন। এর কিছুক্ষণ পরে আশিস রাইয়ের বাড়ানো বল নেওয়ার মতো কেউ ছিলেন না। ২২ মিনিটে লিস্টন কোলোসো ওয়ান টু ওয়ান সিচুয়েশনে গোল মিস করলেন।
২৩ মিনিটে ইভান গঞ্জালেজ একটা দুরপাল্লার শট নিলেন। গোল হলেও হতে পারত। ৩৯ মিনিটে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখলেন হুগো। প্রথমার্ধেই এটিকে মোহনবাগান আরও একটি হলু কার্ড দেখল। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে লিস্টন কোলাসোর কর্ণার বাঁচাতে গিয়ে সুমিত পাসির গায়ে লেগে ইস্টবেঙ্গলের জালে বড় জড়িয়ে গেল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তিনটি পরিবর্তন করলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কনস্ট্যানটাইন। আর দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আহত বাঘের মতো আক্রমণ শানাতে শুরু করল ইস্টবেঙ্গল। ৫৩ মিনিটে দুর্দান্ত সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু দুর্দান্ত সেভ করলেন কমলজিৎ।
৫৭ মিনিটে এটিকে মোহনবাগানের নিশ্চিত গোল গোললাইন সেভ করলেন ইস্টবেঙ্গলের সাইপ্রাস ডিফেন্ডার কিরিয়াকু। দুটো দলের খেলাতেই দারুণ গতি ছিল। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধ আরও বেশি গতিশীল ছিল। শেষ পর্যন্ত পাসিকে তুলে নিলেন কনস্ট্যানটাইন। ৮০ মিনিটে লিস্টন কোলাসোর জায়গায় নামলেন কিয়ান নাসিরি।
নিজের গতিকে ব্যবহার করতে শুরু করলেন। ৮৮ মিনিটে একটা দুর্দান্ত শট মারলেন গোল লক্ষ্য করে। কিন্তু তা বারের ওপর দিয়ে চলে গেল। ইনজুরি টাইমে একটা দুর্দান্ত বল পেয়েছিলেন কিয়ান। মরশুমের প্রথম ডার্বিতে ফের একবার ইস্টবেঙ্গলকে হারাল এটিকে মোহনবাগান। ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে এই নিয়ে পরপর ছ’টি ডার্বিতে লাল হলুদ ব্রিগেডকে হারাল সবুজ মেরুন ব্রিগেড।