পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এক আদিবাসী মহিলার ওপরে ধর্ষণের ঘটনায় রণক্ষেত্রের আকার নিল মধ্যপ্রদেশ মউ জেলা। বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে এক আদিবাসী মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। নির্যাতিতা ২৩ বছরের মহিলা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তিনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অভিযোগ ওঠে, ওই আদিবাসী মহিলাকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে তার দেহ বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছে।
ঘটনা ঘিরে অভিযোগ ওঠে পাতিদার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এর পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে মউ জেলা। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার রাতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আদিবাসীরা। এই অবস্থায় পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোড়া হয়। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৩ জন পুলিশকর্মী। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। এর পর বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। প্রতিবাদ জানানোর সময় ১৮ বছর বয়সী এক আদিবাদী যুবকের মৃত্যু হয়। ইন্দোরের কালেক্টর ইলিয়ারাজা টি কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। তার পরিবারে উদ্দেশে তিনি ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাঁচটি থানায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান।
এদিন পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোড়া হয়। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৩ জন পুলিশকর্মী। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। এর পর বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ।
পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ভাগবত সিং ব্রিন্দে বলেন, আদিবাসী মহিলাটি পাতিদার সম্প্রদায়ের একজন পুরুষের সঙ্গে থাকতেন, তিনি তাকে তার স্ত্রী হিসাবে দাবি করেছিলন। তবে মৃতার পরিবারের সদস্যরা তা অস্বীকার করে বলেছেন তাদের মেয়েকে তড়িদাহত করে মারা হয়েছে। এই ঘটনায় খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। পাথর নিক্ষেপে ডোঙ্গারগাঁও থানার ইনচার্জ ভরত সিং সহ প্রায় দশজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। যারা পাথর ছুড়েছে তাদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ আধিকারিক রাকেশ গুপ্তা জানান, ঘটনায় পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এসে আদিবাসী মানুষেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। কিন্তু তার আগেই এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তাও বেশ কয়েকজন মিলে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে তারা ইট, পাথর ছুড়তে থাকে। সেই সময় পুলিশ নিজের আত্মরক্ষার্থে শূন্যে গুলি চালায়। এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনায় একজন আদিবাসী যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। বৃহস্পতিবার সকালে নির্যাতিতা মহিলার পরিবারের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি।
অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (পিসিসি) সভাপতি এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বলেছেন যে কান্তিলাল ভুরিয়া, বালা বচ্চন, ঝুমা সোলাঙ্কি এবং পচিলাল মেদা সহ কংগ্রেসের আদিবাসী বিধায়কদের সমন্বয়ে একটি দল ঘটনাটি তদন্ত করবে। কমল নাথ একটি ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনাই প্রমাণ করে মধ্যপ্রদেশের এখনও জঙ্গলরাজ চলছে। খুব দুঃখজনক একটি ঘটনা ঘটেছে। আমি মৃতার পরিবারের প্রতি সমবেনা জানাচ্ছি।’