পুবের কলম প্রতিবেদকঃ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিড়া রেলওয়ে স্টেশনের নিকট পাঠডাঙা-দোগাছিয়াতে আয়োজিত হয় এক রক্তদান শিবির। সেইসঙ্গে ট্রাইসাইকেল ও বস্ত্র বিতরণ। এই সামাজিক ও সেবামূলক কাজগুলির আয়োজন করা হয়েছিল বঙ্গীয় সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী মঞ্চের এক অনুষ্ঠান উপলক্ষে। উপস্থিত ছিলেন বঙ্গীয় সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী মঞ্চের সভাপতি জনাব ওয়ায়েজুল হক– পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান– বুদ্ধিজীবী মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মোল্লা– মাহমুদুল হক প্রমুখ। বুদ্ধিজীবী মঞ্চের এই অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সমাজ উন্নয়ন নিয়েও আলোচনার ব্যবস্থা ছিল।
অনুষ্ঠানে এই এলাকার মানুষদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। বিশেষ করে মহিলাদের। তারা স্বউৎসাহে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
সভাপতি ওয়ায়েজুল হক বলেন– পানি ছাড়া যেমন বাঁচা সম্ভব নয়– ঠিক তেমনই প্রত্যেক মানুষেরও শরীরে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন রোগে রক্ত কম হলেই প্রয়োজন পড়ে তার জীবন বাঁচানোর জন্য রক্ত দেওয়ার। করোনাকালে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই বুদ্ধিজীবী মঞ্চ বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে সেই অভাব পূরণের পরিকল্পনা নিয়েছে। তিনি আরও বলেন– আমরা লক্ষ্য করেছি গণতান্ত্রিক লড়াইতে হেরে গিয়ে একটি মহল এখন বাংলায় হিংসা ও দাঙ্গা তৈরির জন্য চেষ্টা করছে।
বাংলায় প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নিজ নিজ ধর্ম ও উৎসব পালন করে। বাংলার নেত্রী বলেছেন– ধর্ম যার যার– উৎসব সবার। বর্তমানে বিজেপি বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানের নাম পরিবর্তনের খেলায় মেতেছে। কিন্তু এভাবে মানুষের মন থেকে ইতিহাস মুছে দেওয়া যায় না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এখন ভারতের নেত্রী। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা তাঁকে দেশের নেতৃত্বের আসনে দেখতে চাই। তাই তাঁর কথা ও উন্নয়নমূলক কাজগুলিকে সবার সামনে আরও বেশি করে তুলে ধরতে হবে।
আহমদ হাসান ইমরান বলেন– স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন– ‘জীবে প্রেম করে যেইজন– সেইজন সেবিছে ঈশ্বর’। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. বর্ণিত একটি হাদিসে কুদসি রয়েছে যে– কিয়ামত বা বিচারের দিন আল্লাহ্তায়লা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করবেন– আমার ওমুক বান্দা বস্ত্রহীন ছিল– ওমুক বান্দা বা বান্দী ক্ষুধার্ত ছিল– ওমুক ছিল অসুস্থ। কিন্তু তুমি বা তোমরা তাদেরকে বস্ত্র– অন্ন দাওনি– অসুস্থকে সেবা করনি। কাজেই তোমরা আজ বিচারের দিন আমার রহমত থেকে বঞ্চিত থাকবে। এ থেকেই মানুষকে সাহায্য করার যে গুরুত্ব কত– তা আমরা বুঝতে পারি।
তিনি আরও বলেন– নারীদের পরিবার ও সমাজ উন্নয়নে সব থেকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। আর নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন– যখন কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময় প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছিল– লোক ভীত-সন্ত্রস্ত তখন এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনের পরোয়া না করে হাসপাতালে গেছেন– বাজারে গেছেন– মানুষকে দিশা দিয়েছেন কিভাবে কোভিডের মধ্যে সুস্থ থাকতে হবে। এই নেত্রী এখন দেশ নেত্রী। ভারতের মানুষও তাঁর দিশা মেনে চলবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জনাব আলমগীর মোল্লা– সহ সম্পাদক পীরজাদা মেহবুল্লা হোসেনি। উপস্থিত ছিলেন মঞ্চের কোষাধ্যক্ষ শেখ হান্নান– রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শিক্ষাবিদ দীপঙ্কর ভট্টাচার্য– আবুবক্কর সিদ্দিক খান প্রমুখ।
স্থানীয় বুদ্ধিজীবী মঞ্চের নেতা-কর্মীরাও এই অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য ব্যাপক পরিশ্রম করেন। এই সভায় সভাপতি ওয়ায়েজুল হক ঘোষণা করেন জেলা কার্যকরী সভাপতি হবেন আরিফুল ইসলাম (শান্ত)– সভাপতি মেহেদি মুন্না– সহ সভাপতি শেখ সাইফুদ্দিন।