জইদুল শেখ, বড়ঞা: মনের জোর, আর ইচ্ছে থাকলে যে সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করা যায় সেটাই প্রমাণ হল আরও একবার। মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলে প্রথম হয়ে বড়ঞার মুখ উজ্জ্বল করলেন প্রতিবন্ধী ছাত্র মোঃ আলম রহমান। শারীরিক বাধা আলমের মনের ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আজ পাঁচজনের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম মোঃ আলম রহমান।
কান্দি মহকুমার বড়ঞা থানার অন্তর্গত বৈদ্যনাথ গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আলম রহমান আজ সকলের গর্ব। ভরতপুর থানার অন্তর্গত গড্ডা গণপতি আদর্শ বিদ্যাপতি স্কুলের এই ছাত্র ১০০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু হার মানেনি আলম। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে সে।
রেজাল্ট প্রকাশ হতেই স্কুলের সকলকে চমকে দিয়ে জানা যায় প্রথম হয়েছে মোঃ আলম রহমান। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬২৫। রাজ্যে হয়তো দশের মধ্যে আসতে পারেনি, কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে গণিতে ৯৮, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৪, ভূগোলে ৯৫ পেয়েছে সে। তার এই নজরকাড়া সাফল্যে গর্বিত কান্দি ব্লক। হাসি ফুটেছে পরিবার সহ গ্রামের এবং স্কুল শিক্ষকদের।
মোঃ আলম রহমান নিজে স্নান করতে পারে না, খাবার খাওয়ার জন্য মায়ের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। কিন্তু পরীক্ষায় স্কুলে প্রথম তার নাম।
শুক্রবার দুপুরে এই খবর পাওয়া মাত্র বড়ঞা ডিওয়াইএফআই এবং ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষক থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানো হয়। মোঃ আলম রহমানের স্বপ্ন মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার। কিন্তু পরিবারে আর্থিক অনটন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তাঁর বাবা ফিরোজ মোঃ বলেন, তার ছেলে একা স্কুল যেতে পারে না। সাইকেলে করে নিয়ে যেতে হয়। সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য অনেক দূর যেতে হবে। সংসার চালিয়ে তাঁর পড়াশোনা কিভাবে চালাব সেটাই চিন্তা করছি। ”
এ বিষয়ে গড্ডা গণপতি আদর্শ বিদ্যালয়ের এস আই তনুময় দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ভাবতে এবং বলতে খুব ভালো লাগছে প্রতিবন্ধকতা শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও বাধা হয় না, তাঁর প্রমাণ মোঃ আলম রহমান। তাঁর পড়াশোনার যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে পরিবারের আর্থিক সমস্যার কথা জানাব। ”