অপরাজিতা জোয়ারদার, রায়গঞ্জঃ একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে সোমবার মালদায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই আজ, মঙ্গলবার জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুর ১’টা নাগাদ হেলিকপ্টারে করে কর্ণজোড়ায় অডিটোরিয়ামে আসেন তিনি। সেখানে উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক– জনপ্রতিনিধি– পঞ্চায়েত সমিতি– জেলা পরিষদ– শিক্ষা প্রতিষ্ঠান– ব্যবসায়ী সংগঠনদের নিয়ে কথা বলেন। বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন ও সমাধান করেন।
জেলার জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন– রাজ্য সরকার দুয়ারে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’ প্রচুর অর্থের প্রয়োজন যা কেন্দ্রের থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই যে সব প্রকল্পগুলো চালু আছে তার সুবিধা যাতে প্রতিটি বাড়ির মানুষ পায় সেদিকে নজর দিতে। এদিন উত্তর দিনাজপুর জেলায় ৭০ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার ১৫ টি প্রকল্পের শিলান্যস করা হয়। ১৬৩ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা মূল্যের ৩০ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
এদিন জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনা জানান– রাজ্য সরকারের নির্দেশে ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্টুডেন্টস উইক পালন করা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে ২৫ হাজার স্টুডেন্টকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড বিলি করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। যদিও এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলির সেভাবে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্কুল কলেজ– পলিটেকনিক কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্প করে কাজ করার নির্দেশ দেন। ইসলামপুরের বিধায়ক আধুল করিম চৌধুরী পৃথক জেলার দাবি জানালে তা নাকজ করেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলার চোপড়া– ইসলামপুর সহ সীমান্ত লাগোয়া ব্লকগুলিতে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন তিনি বলেন, সীমান্ত লাগোয়া মানুষরা অনবরত বিএসএফ-এর নির্যাতনের মুখে পড়ছেন। সেক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনকে বিএসএফকে নিজের এলাকায় কাজ করতে শেখাতে নির্দেশ দেন। অযথা বিএসএফ-কে নিজের এলাকায় ঢুকে অত্যাচার করতে দেওয়া যাবে না বলেও ডিজিকে নির্দেশ দেন তিনি। বিডিওকে নিয়ে প্রতি এলাকার পুলিশ আধিকারিকরা যেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন সে নিয়েও জানান তিনি।
অপর দিকে জেলার উন্নয়নে কুলিক মিল্ককে বাংলার ডেয়ারিতে অর্ন্তভুক্ত করার কথাও জানান তিনি। কালিয়াগঞ্জের ২৫০ বেডের কাজও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। অপরদিকে কালিয়াগঞ্জের চান্দোলে সরকারি ৩১ একর কৃষি জমিতে কৃষিজ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করা যায় কিনা তা নিয়েও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত সমিতি– জেলা পরিষদকে সরকারি প্রকল্পের টাকা সঠিকভাবে কাজে লাগানোর নির্দেশ দেন তিনি। অপরদিকে জেলার শিল্পকেন্দ্র স্পিনিং মিলের পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে টেক্সটাইল পার্ক গড়ার কথা বলেন তিনি। রাজ্যের প্রতিটি স্কুলের ড্রেস বানাতে বাইরে থেকে কাপড় কিনতে হত। কিন্তু এখন থেকে এই টেক্সটাইল গুলিতেই কাপড় তৈরি হবে। তৈরি হওয়া কাপড় কিনে নেবে রাজ্য সরকার। এতে করে কর্মসংস্থান বাড়বে।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের অর্ধসমাপ্ত কাজ দ্রুত শেষ করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই বৈঠক শেষে মালদার উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি।