আবদুল ওদুদ: দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের মোদি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে লাভ হয়নি। এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমুলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একযোগে দিল্লিতে ধরনা কর্মসূচি।
এর আগে কেন্দ্রেকে চিঠি দিয়ে অনুমতি চাইলেও মেলেনি সাড়া। তাই এবার নয়া কর্মসুচি ঘোষনা করল তৃণমুল কংগ্রেস। বার বার দিল্লির পুলিশ-প্রশাসনকে চিঠি দিয়েও তৃণমূলের কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি মেলেনি বলেই দাবি তৃণমুল কংগ্রেসের। এ বার তাই নতুন বিকল্প কর্মসূচি ঘোষণা করল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে বিকল্প ওই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ওই কর্মসূচি কী ভাবে রূপায়িত হবে তার ব্যাখ্যা দিলেন অন্য দুই মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং শশী পাঁজা।
কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে বাংলার বকেয়া সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে শুধুমাত্র ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলা পাবে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বার বার বলা সত্ত্বেও সেই টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। সেই টাকা উদ্ধারের জন্যই আগামী ২ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রস্তুতি হিসেবে দিল্লির দরিয়াগঞ্জ থানার ডিসিপিকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন।
কিন্তু সেই দাবি মানেনি কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ। আর তার জেরে শনিবার বিকালে তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেওয়া হল মোদি সরকারের পুলিশ অনুমতি না দিলেও আগামী ২ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্না দেবেই তৃণমূল। নেতৃত্বে থাকবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, গান্ধী জয়ন্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সকল সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা দিল্লির রাজঘাটে প্রার্থনায় বসবেন ২ অক্টোবর, গান্ধী জয়ন্তীতে। চন্দ্রিমা জানিয়েছেন, ওই দিন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে সাক্ষাতের সময়ও চাওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে। রাজঘাটে প্রার্থনা সেরে সকলে গিরিরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবেন। বাংলা থেকে ৫০ লক্ষ চিঠি নিয়ে তাঁরা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী শশী। রাজ্যে যাঁরা ১০০ দিনের কাজ করেও অর্থ পাননি, তাঁরাই গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছেন। সেই সব চিঠিই গিরিরাজের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শশী।
প্রসঙ্গত,দিল্লির কর্মসূচিতে বাংলার ৫০ হাজার মানুষকে জড়ো করতে চায় তৃণমূল। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত দিল্লিতে ওই ধর্মা কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। আন্দোলনকারীদের থাকার জন্য রামলীলা ময়দানে তাঁবু তৈরি করতে চেয়ে দিল্লি পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন ডেরেক। যদিও সেই অনুমতি মেলেনি। এর পাশাপাশি দিল্লির যন্তর মন্তর, কৃষি ভবনের বাইরে ও কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের বাড়ির কাছেও ধর্না করতে চেয়ে দিল্লি পুলিশকে চিঠি পাঠিয়েছিল তৃণমূল।
জানানো হয়েছিল আগামী ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের বাড়ির সামনে ধনায় বসবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের এই কর্মসূচির কথা আগে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বিদেশ সফরে যাওয়ার আগে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি জানিয়েছিলেন, গান্ধীজয়ন্তীতে দিল্লির রাজঘাটে প্রার্থনায় বসবেন তিনি। সঙ্গে থাকবেন অভিষেক-সহ অন্য নেতারা। শনিবার মমতার সেই বক্তব্যকেই তৃণমূল সংগঠনের তরফে ঘোষণা করেছে।