নয়াদিল্লিঃ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রোহিটংন নরিম্যান এখানে এক অনুষ্ঠানে ভাষণে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ইউএপিএ(আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট ১৯৬৭)এর সঙ্গে যুক্ত করে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ অনুচ্ছেদে অভিযুক্ত করা অবিলম্বে খারিজ করা হোক। দীর্ঘকাল ধরে এই প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টের কাছে জমা পড়ে রয়েছে। তাকে কেন্দ্রের কাছে ফেরত না পাঠিয়ে সুপ্রিম কোর্টই সিদ্ধান্ত নিক।নরিম্যান বলেন, কেন্দ্রে নানা সরকার আসবে এবং যাবে।তারা কী করল তা ভেবে বসে থাকলে চলবে না। বরং সুপ্রিম কোর্টকেই অগ্রণী হয়ে সিডিশন বা রাষ্ট্রবিরোধিতার এই কালা ধারা রদ করতে হবে। তবে দেশের মানুষ নিরাপদে থাকতে পারবে।ব্রিটিশ অধীন ভারতে এই ধারা ব্যবহৃত হত। স্বাধীন ভারতে কেন তা থাকবে?
নরিম্যান বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, বিশ্ব আইনি সূচকে ভারতের স্থান রয়েছে ১৪২এ। কারণ এদেশে এমন বহু নারকীয় এবং ঔপনিবেশিক আইন এখনও বহাল।ফিলিপিন্সের দু‘জন সাংবাদিক এবার নোবেল শান্তি থেতাব পেলেন।ভারতের সাংবাদিকেরা কেন পান না? কারণ আন্তজার্তিক আইনি সূচকে ভারতের স্থান সেখানে ১৪২এ। কেন এমন হাল হবে? আমাদের ঔপনিবেশিক কালা কানুন প্রত্যাহার করতে হবে।নরিম্যান বলেন, চিন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের পর ভারত সরকার ইউএপিএ করে। এটা এক নারকীয় আইন। এতে জামিন পাওয়ার অধিকার নেই। কমপক্ষে ৫ বছরের জেল অনিবার্য। এই আইন তুলে দিতে হবে।এখন তো আর যুদ্ধের পরিস্থিতি নেই। তবে আইনটি রাখা হয়েছে কেন? এমন কালা কানুন থাকলেই তার অপব্যবহার হবে, এটা সহজ কথা। তাই হচ্ছে।আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের এক অবজারভেশনের উপর ভিত্তি করে ১২৪এ ধারা যোগ করা হয়েছিল। ভারতের মতো বৃহত্তর গণতন্ত্রে এটা একেবারেই বেমানান। যেভাবে প্রাক্তন বিচারপতি নরিম্যানের মতো বিশিষ্ট আইনজ্ঞ সরাসরি ইউএপিএকে কালা কানুন বলে অভিহিত করেছেন, তা তাঁর সাহসিকতারই পরিচয় দেয়। অন্য কেউ বললে এতক্ষণে গ্রেফতার করা হত।