পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্টের মতো বড়বড় পরীক্ষার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে রাজস্থানের কোটার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পড়ুয়ারা এখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসেন। সেই কোটাতেই ঘটে চলেছে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা। ক’দিন আগেই বাংলার পড়ুয়া ফরিদ হোসেনর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
সেও ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নিট’-এর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিল কোটায়। আর এবার এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হল। মৃত ছাত্রীর নাম নিশা যাদব (২১)। সে উত্তরপ্রদেশের আরাইয়া জেলার বাসিন্দা। কোটায় এসেছিল নিটের প্রশিক্ষণ নিতে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান নিশা আত্মহত্যা করেছে। যদিও কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। এই নিয়ে গত ১১ মাসে কোটায় ২৯জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। ওই ছাত্রী কোটার মহাবীর নগর এলাকায় একটি হস্টেলে থাকত। কেন সে মৃত্যুর পথ বেছে নিল তা স্পষ্ট নয়। তরুণীর বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি বুধবার রাতে মেয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোন করেছিলেন। কিন্তু বার বার চেষ্টা করা সত্ত্বেও মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। এর পর তিনি হস্টেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন।
তাঁদের জানান, তিনি মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চান। এরপর তড়িঘড়ি হস্টেল কর্তৃপক্ষের তরফে তরুণীর রুমের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু হয়। তাতে কাজ না হওয়ায় ঘরের দরজায় ধাক্কা দেওয়া হয়। কিন্তু ভিতর থেকে কোনও সাড়া না মেলায় দরজা ভেঙে ফেলা হয়। দেখা যায়, সিলিং থেকে ঝুলছে তরুণীর দেহ। পুলিশ তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। উল্লেখ্য, এর ঠিক দু’দিন আগে বাংলার বীরভূম থেকে কোটায় পড়তে যাওয়া এক ছাত্রর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেও মহাবীর নগরে একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকত।
উল্লেখ্য, কোটায় বিভিন্ন রাজ্যের পড়ুয়ারা যায় কোচিং নেওয়ার জন্য। কোটা শিক্ষার হাব নামেও পরিচিত। সেখানকার কোচিং সেন্টারে পড়ে নিট, জেইই-র মতো বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয় তারা। কিন্তু চলতি বছরে একের পর এক কোচিং ছাত্রদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে সেখানে। ফলে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দানা বেঁধেছে রহস্য।
এভাবে ধারাবাহিক মৃত্যুর ঘটনায় রাজস্থানের পুলিশ-প্রশাসন আগেই তৎপর হয়েছিল। তারা কোটার সমস্ত কোচিং ইনস্টিটিউটের কর্তৃপক্ষকে ডেকে বিশেষ ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলেছিল। তারপর গত এক মাস ধরে আর আত্মহত্যার ঘটনা সামনে আসেনি। এরপর পড়ুয়ারা দীপাবলির ছুটিতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিল। ফিরে এসে ফের কোচিং নিতে শুরু করেছিল। তার মধ্যেই দু’দিনে দুই পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।