পুবের কলম প্রতিবেদক,নদিয়া:
অখন্ড ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবীদের কন্ঠে ধ্বনিত ঐতিহাসিক সংগীতের সুর বদল করার প্রতিবাদে সোমবার সভা ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে প্রস্তাব গ্রহণ করল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘রানাঘাট মৈত্রী”।রানাঘাট মৈত্রীর সকল সভ্যরা জানায়”কারার ঐ লৌহ কপাট”সুর বদল আমরা মানছি না।আমরা এই বিকৃতি বা বদলের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার জন্য সকল নজরুল প্রেমী, অনুরাগী ভক্ত ,শিল্পী সংগঠন এবং সকল সংস্কৃতি চর্চার ব্যক্তি ও সমাজের সবস্তরের মানুষের কাছে আবেদন রাখছে ‘রানাঘাট মৈত্রী’।
বাংলার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লৌহ কপাট’-এ এআর রহমানের দেওয়া সুর নিয়ে ক্ষোভে সামিল হয়েছে গোটা বাংলা। রহমানের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বাংলার শিল্পীরা। এ নিয়ে রানাঘাট মৈত্রী এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।সংগঠনের সভাপতি সুবীর ভৌমিক ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘ এ আর রহমানকে সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা জানিয়েই জানতে চাই, ওঁকে কে অধিকার দিল গানটি বিকৃত করার। স্বত্ব দেওয়ার সময় তো সুর বদলের কথা বলেনি নজরুলের পরিবার।নি। কী রকম একটা করে দিয়েছে গানটাকে! একটা গ্রামীণ সংগীতের মতো, ভাটিয়ালির মতো করে দিয়েছে। অনেক সস্তা করে দিয়েছে।’ নজরুল ১৯২২ সালের ২০ জুন ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানটি লিখেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দাস যখন কারারুদ্ধ হন, তখন তাঁর স্ত্রী বাসন্তী দেবী নজরুলকে বলেছিলেন, বাংলার মানুষকে নিয়ে কিছু লিখতে। সেই অনুরোধের সম্মান রেখেই নজরুল রচনা করেছিলেন ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানখানা। ১৯৪৯ সালের জুন মাসে যা রেকর্ড করা হয়েছিল। গেয়েছিলেন গিরিন চক্রবর্তী। কবি শফিকুল ইসলাম বলেন,পরিচালক রাজাকৃষ্ণ মেননের ছবি ‘পিপ্পায় ব্যবহার করা হয়েছে নজরুলের লেখা ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানটি। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি ছবিতে নজরুলের গান ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু সুর নিজের মতো করে বদলে নিয়েছেন অস্কার-জয়ী রহমান। যাতে দুই বাংলার বহু মানুষই বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।আমরা সামিল হলাম।এদিনের সভায় আরও যারা বক্তব্য রাখেন তাদের মধ্যে ছিলেন পরেশনাথ কর্ম কার অলোক কুমার দাস,সৃজনী মুখার্জী,প্রদীপ পাল,করবী সেন ,অধীর মন্ডল,অঞ্জনা বিশ্বাস প্রমুখ ।