পারিজাত মোল্লা: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে জামিন পেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।এদিন শর্তসাপেক্ষে তাঁকে জামিন দিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়েছিলেন মিডলম্যান প্রসন্ন রায়। তাঁকে জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী জামিনে মুক্ত হওয়ার পর কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিন পাওয়াটা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নুতন মোড় নিচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে এদিন গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি বিষয়ক মামলায় জামিন পেলেন তিনি।তবে নবম -দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় আলিপুর আদালতে দারস্থ হয়েছে সিবিআই বলে জানা যাচ্ছে।
নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর প্রত্যক্ষ যোগ মিলেছিল। বারবার উঠে এসেছে তাঁর নাম। তবে বুধবার তাঁকে শর্ত সাপেক্ষেই মুক্তি দেয় জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। এর বিনিময়ে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতিকে। এছাড়া কলকাতা পুরসভা এলাকায় ছেড়ে বেরতে পারবেন না তিনি। বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায় তাঁর প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, -‘ তাঁর কাছে পাসপোর্ট থাকলে তা নিম্ন আদালতে জমা করতে হবে কল্যাণময়কে’।এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলো হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ।
হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে , -‘প্রায় ১৪ মাস জেল বন্দি রয়েছে কল্যাণময়। অথচ সিবিআই এখনও তাদের তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। কেন একজন অভিযুক্তকে এত দিন বন্দি রাখা হবে?’ সেই সদুত্তর দিতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। উল্লেখ্য , স্কুলে গ্ৰুপ-সি এবং গ্ৰুপ-ডি নিয়োগ মামলায় কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর নামে।’ আবেদনকারী অর্থাত্ কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি। তাঁর যথেষ্ট সামাজিক পরিচিতি আছে, আগেও তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। এরফলে তাঁর পালিয়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই’। এমন পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের ।
কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর সরকারি পদ ব্যবহার করে দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ।’এই মুহূর্তে তিনি আর সেই পদে নেই। এরফলে একই ধরনের অপরাধ তিনি আবারও করতে পারেন সেই সম্ভাবনা নেই’ বলেই পর্যবেক্ষণ ডিভিশন বেঞ্চের।’এক বছরের ওপর হয়ে গেল তদন্ত চলছে। নিয়োগপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। প্রয়োজনীয় নথিও বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। এরফলে তথ্য বিকৃত করার সুযোগ নেই’ বলেই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের । ডিভিশন বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে আরও জানিয়েছে -‘ এই মামলার একটা বড় অংশের সাক্ষী সরকারি আধিকারিক।
এই একটা অংশের জিজ্ঞাসাবাদ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। এরফলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করার বা ভয় দেখানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ’ বলেই জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির কোন নথি বা আয় বহির্ভূত সম্পত্তির হিসাব দেখাতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । তবে কল্যাণময় এর জেলমুক্তি আটকাতে মরিয়া সিবিআই।এদিন আলিপুর আদালতের দারস্থ হয়েছে সিবিআই বলে জানা যাচ্ছে। কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের হেফাজত চেয়ে আবেদন রাখতে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। শর্ত গুলি হলো, কলকাতা পুরসভা এলাকায় থাকতে হবে।বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না।পাসপোর্ট থাকলে নিম্ন আদালতে জমা করতে হবে।অতি সম্প্রতি নিয়োগ মামলায় কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুব্রত রায় সামন্ত ও অশোক সাহা সিবিআই তিন জনকে নতুন মামলায় প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জন্য আবেদনের শুনানি ছিল।
শুনানি হলেও কেস ডায়েরি সিবিআই নিয়ে আসেনি। তাই বুধবার নির্দেশ দেওয়া হয় কেস ডায়েরি জমা দিয়ে কেন নতুন মামলায় আরসি তিন তে নেওয়া প্রয়োজন? তার রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ভুয়ো নিয়োগপত্রে সই করার অভিযোগ রয়েছে কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে। বাগ কমিটির রিপোর্টেও লেখা হয়েছিল, কল্যাণময়ের নির্দেশেই ভুয়ো বেআইনি নিয়োগপত্র তৈরি হয়েছিল। এসএসসির দুর্নীতিতে গ্রেফতার তিনি ছিলেন তৃতীয় আধিকারিক। তার আগে এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও আরও এক।আধিকারিককে গ্রেফতার করেে সিবিআই।নিয়োগ দুর্নীতিতে কল্যাণময়ই প্রথম জামিন নন। এর আগে জামিন পান নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য।