পুবের কলম প্রতিবেদক, মালদা: পড়ুয়াদের অঙ্কের ভীতি দূর করতে এগিয়ে এসেছে গণিত মেধা অনুসন্ধান কেন্দ্র। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে তারা অঙ্কের বিভিন্ন কৌশল শিখিয়ে গণিতকে আনন্দদায়ক করে তোলার কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্যে জেলায় হাজার হাজার মেধা তৈরি করে ফেলেছে তারা। ফি বছর জেলা জুড়ে গণিতের মূল্যায়ন করে থাকে তারা।
মেধা তালিকায় থাকা পড়ুয়াদের পুরস্কৃত করার পাশাপাশি সফলদেরও শংসাপত্র দিয়ে উৎসাহিত করা হয়। রবিবার তাদের বার্ষিক অনুষ্ঠান হয়ে গেল মালদা কলেজের দুর্গা কিঙ্কর সদরে। অঙ্কের বিভিন্ন সহজ কৌশল অঙ্কের মাধ্যমে দেখায় শিক্ষার্থীরা। নিমিষের মধ্যে বড় বড় গুণ, ভাগ করা যায়, সেই কৌশলও দেখানো হয়। পাশাপাশি গণিত পড়ুয়াদের মধ্যে আনন্দদায়ক করে তুলতে গম্ভীরা গানের উপস্থাপন করা হয়। সেখানে গণিতের বিভিন্ন কৌশলও শেখানো হয়।
এদিন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুর্শিদাবাদের এডুকেশন কলেজের অধ্যাপিকা চন্দ্রমল্লিকা প্রামানিক, রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক অনুকূলচন্দ্র বিশ্বাস, শিক্ষক শুভ্রাংশু চট্টোপাধ্যায়, শিখক দীপক রায়, ফেকু সেখ, সঞ্চালক দীপক দাস প্রমুখ।
অধ্যাপিকা চন্দ্রমল্লিকা প্রামানিক জানান, ‘স্কুল পড়ুয়াদের এ ধরনের পরীক্ষার খুব প্রয়োজন রয়েছে। মালদা জেলায় গণিত মেধা অনুসন্ধান কেন্দ্র প্রশংসনীয় কাজ করে চলেছে। পড়ুয়াদের অঙ্কের ভীতি দূর করতে হবে। আর এ ব্যাপারে অভিভাবক-অভিভাবিকাদের এগিয়ে আসতে হবে। পড়ুয়াদের নিয়মিত অনুশীলনের দরকার।’ করোনা কালে গত ৩ বছর মূল্যায়ন করা সম্ভবপর হয়নি। গত বছর মূল্যায়ন করা হয়।
গোটা জেলার মোট ৭৫ স্কুলের ১৫৩৭ পড়ুয়া অংশ নেয়। ক্লাস থ্রি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মেধা তালিকায় মোট ১৫৭ জন স্থান দখল করে। সফলদের মধ্যে ১৭৫ জনকে শংসাপত্র দেওয়া হয়। তৃতীয় শ্রেণিতে ৯৬ পেয়ে সেরা কালিয়াচকের দ্য নোবেল অ্যাকাডেমির সামিহা সুলতানা। চতুর্থ শ্রেণিতে ৯২ পেয়ে সেরা একই স্কুলের ছাত্রী ফারিসা সিদ্দিকি। ৮৬ পেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে সেরা একই স্কুলের ছাত্রী আদিবা নওয়াজ। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৮৪ পেয়ে সেরা রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সৈকত রায়। সপ্তম শ্রেণিতে ৯৬ পেয়ে প্রথম একই স্কুলে ছাত্র বিশাল শর্মা। ৯৯ পেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে সেরা একই স্কুলের ছাত্র ইন্দ্রজিত ঝা।
আয়োজক গণিত মেধা অনুসন্ধান কেন্দ্রের কর্ণধার দীপক দাস জানান, ‘গত ৩ বছর করোনা-র’ কারণে আমরা পরীক্ষা নিতে পারি নি। এবার গত বছর থেকে শুরু হয়েছে। আগামীতে উচ্চমাধ্যমিক অবধি অঙ্ক মেধা পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এবার সাফল্যের দিকে শহরকে টেক্কা দিয়েছে কালিয়াচক। গণিতে সাফল্যের হার যেমন বেশি, তেমনই মেধা তালিকাতেও বেশ কয়েক জন স্থান দখল করেছে। দি নোবেল অ্যাকাডেমি প্রধান শিক্ষক আকিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্কুলের ১৫ জন ছাএ মেধাতে জায়গা করেছে। এর মধ্যে তৃতীয় থেকে পঞ্চম পর্যন্ত প্রথম স্থান অধিকার করে গৌরব বৃদ্ধি করেছে।