পারিজাত মোল্লা: সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠে জেলবন্দি যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ এর বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত ওএমআর শিট সংক্রান্ত মামলা।নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এদিন বড় অভিযোগ করল ইডি। কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডির সেই অভিযোগের সারবত্তা আছে বলে জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদও! সব শুনে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেন এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত এর।
এদিন ইডি কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে জানিয়েছে, -‘ কুন্তলের বাড়িতে তল্লাশি চলাকালীন তারা ১৮৯টি ওএমআর শিট পেয়েছে। গত ডিসেম্বরে টেটের যে পরীক্ষা হয়েছিল সেই পরীক্ষার ওএমআর শিটের কপি মিলেছে কুন্তলের বাড়িতে’। এই শুনেই বিচারপতি পৃথকভাবে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন এদিন।বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ, -‘কুন্তলকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে হবে। কাদের ওএমআর শিট ওখানে মিলেছে, তাঁদের নাম ও রোল নম্বর ধরে তদন্ত করতে হবে। সবটাই তিন দিনের মধ্যে করতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কে’। হাইকোর্ট এওজানিয়েছে, -‘প্রয়োজনে যাঁদের ওএমআর শিট মিলেছে তাঁদেরও হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই’। হাইকোর্টে এদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে -‘তারা বিস্মিত। এত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এত চেষ্টা করার পরেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে’।
জানা গিয়েছে কুন্তলের বাড়ি থেকে বহু টেট পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ডও মিলেছে। পর্ষদ জানিয়েছে, -‘ স্বচ্ছতা রাখতেই ওএমআর শিটের কপি পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছিল। তা যদি তাঁরা জেরক্স করে কাউকে দিয়ে দেন তাহলে পর্ষদের কী করার থাকতে পারে?’এদিন এই মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কড়া মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন,- ‘কিছু দুষ্কৃতী রাজ্যটাকে ধ্বংস করে দেবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু দালাল এখনও চাকরি বিক্রির চেষ্টা করছে, আর কিছু লোক সেই দালালদের আড়াল করছে’।’
বিচারপতি এও বলেন, যাঁদের ওএমআর শিট পাওয়া গেছে সেই ১৮৯ জনকে কালাপানি পাঠানো হবে।কুন্তলকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তবে এবার তাঁকে হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই। এর আগে সিবিআই দফতরে দু’দিন হাজিরা দিয়েছিলেন কুন্তল। তবে নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি যদি কিছু করে থাকতাম তাহলে তো আমায় ছাড়ত না। আপনারাই তো দেখলেন, কতক্ষণ ছিলাম ভিতরে।’তারপর অবশ্য কুন্তলের চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে দীর্ঘক্ষণ ধরে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। এখন দেখার তিন দিনের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে কী রিপোর্ট দেয় সিবিআই।আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার অনেকটাই স্পষ্ট হবে সিবিআইয়ের তদন্তের গতি নিয়ে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।