শুভজিৎ দেবনাথ, ডুয়ার্স: সোমবার রাতে ফের ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোরা -১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪/১৯৬ নং বুথে তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে সিপিআই তে যোগদান করলো ১২ টি পরিবারের প্রায় ৪০ জন সদস্য দাবি বাম নেতাদের।উপস্থিত ছিলেন এলাকার উপ – প্রধান তথা সিপিআই নেতা সুধীর চন্দ্র রায় , যজ্ঞেশ্বর রায়, কালিপদ রায় সহ অন্যান্য বাম নেতৃত্বরা। তাদের নেতৃত্বেই এই যোগদান পর্ব চলে। উল্লেখ্য, সপ্তাখানেক আগেও একই বুথে তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে প্রায় শতাধিক কর্মী সমর্থক সিপিআই – এ যোগদান করেন। রাজ্য জুড়ে যখন বামেদের খুঁজে পাওয়া যায় না বলে দাবি করেন রাজ্যের শাসক ও প্রধান বিরোধী দল সেই মহুর্তে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পরপর এভাবে দুই ফুলের ভাঙ্গন যথেষ্টই হইচই ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি তৃণমূলের প্রতি আস্থা হারিয়েছে গ্রামের গরিব মানুষেরা? উঠছে প্রশ্ন।
যদিও বামেদের এই যোগদান কে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল ও বিজেপি। তৃণমূল নেতা সাইরুল ইসলাম বলেন, বামফ্রন্ট রাজ্যে ডুমুরের ফুল। সামনেই নির্বাচন তাই ঢাক ঢোল পিটিয়ে মাঝে মধ্যেই সার্কাস দেখাচ্ছে আমরা মজা পাচ্ছি। সাধারণ মানুষের এতটাই খারাপ দিন আসেনি যে বামফ্রন্টে যোগদান করবে। নিজেদের লোককে নিজেরাই ঝান্ডা ধরাচ্ছে।যেই এক জন আছে বামেদের এবারের নির্বাচনে শূন্য হয়ে যাবে।
বিজেপি নেতা ধূপগুড়ি উত্তর-পূর্ব মন্ডল সভাপতি কৌশিক নন্দীর মতে, বামেরা রাজ্যে থাকলে তো যোগদান করবে। ৩৪ বছরের পুরনো স্বপ্নটাকে হয়তো নতুন করে আবার দেখতে শুরু করেছে। একদিকে যখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দুর্নীতি থেকে শুরু করে, রেশন দুর্নীতি বিভিন্ন জায়গায় হোচট খেতে হয়েছে সাধারণ মানুষেকে। আস্থা হারিয়েছে প্রশাসনের প্রতিও। যারফলে শাসক দলের ভাঙ্গন শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
অন্যদিকে, যে সমস্ত মানুষেরা চাকরি পেয়েছিলেন, যেমন আইসিডিএস, আশা কর্মী তাদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলেই অভিযোগ। তবে ঘাসফুল শিবির মরিয়া আস্থা ফিরে পাওয়ার আশায়। তাই দুয়ারে সরকার,দুয়ারে রেশন বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়েছে তৃণমূল সরকার।
তৃণমূলের কাছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বড় চ্যালেঞ্জ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে পেতে সক্ষম হবেন? কারণ এখনো টেট দুর্নীতি নিয়ে খাড়া ঝুলছে শাসক দলের ঘাড়ে। এদিকে আবাস যোজনার ঘরের দুর্নীতি রুখতে ব্লকে ব্লকে কমপ্লেন বক্স চালু করেছে দরকার। যদিও বিরোধিতা বলছে কমপ্লেন বক্সের গুরুত্ব গত ১০১১ সাল থেকে ২০২২ কোনো সুফল পায়নি সাধারণ মানুষ। একটা অংশের নেতা জনপ্রতিনিধি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে।অন্যদিকে আরেকটা অংশের নেতারা নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যাস্ত। যার ফলে মাঝে মধ্যেই ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। স্বাভাবিক ভাবেই চা – বলয়ে ভোট ব্যাংক উদ্ধার করতে সক্ষম হবে কিনা, তা কিন্তু বলবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল।