পুবের কলম প্রতিবেদকঃ মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের পর এবার প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা চলাকালীন-ও হয়তো বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট পরিষেবা। ১৬ দফা গাইডলাইনের পর রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে প্রাথমিকের টেটের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার আবেদন জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
তবে সব পরীক্ষা কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ করতে চায় না পর্ষদ। রাজ্যজুড়ে স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা তৈরি করছে পর্ষদ। সেই স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতেই পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ রাখতে চায় পর্ষদ। এই বিষয়ে পর্ষদ-এর তরফে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
রাজ্যের মোট ১৪৫৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১১ ডিসেম্বর প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা হবে। তার মধ্যে থেকেই ৫০ শতাংশরও বেশি স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা তৈরি হতে চলেছে বলেই পর্ষদ সূত্রে খবর।
রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অন্যতম বড় পরীক্ষা। আর তাকে কেন্দ্র করেই এবার জেলায় জেলায় গাইডলাইন পাঠাল রাজ্য শিক্ষা দফতর।
আগামী ১১ ডিসেম্বর প্রাথমিকের টেট। পরীক্ষা দেবেন প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী। আর সেই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই ১৬ দফা গাইডলাইন প্রতিটি জেলার জেলাশাসককে এবং কলকাতা পুলিশের পুলিশ কমিশনারকে পাঠাল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। প্রত্যেকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। গাইডলাইনে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই প্রাথমিকের টেটেও কার্যত একই নিয়ম কার্যকর থাকবে বলেই উল্লেখ করা হয়েছে গাইডলাইনে। গাইডলাইনে বলা হয়েছে রাজ্যজুড়ে ১৪৫৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে নেওয়া হবে প্রাথমিকের টেট। মোট পরীক্ষা দেবে রাজ্য জুড়ে ৬ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৩১ জন পরীক্ষার্থী। দুপুর ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মোট আড়াই ঘণ্টার হবে এই পরীক্ষা।
প্রত্যেকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে এক্সটেনশন অফিসার পর্যায়ের আধিকারিকরা থাকবেন পুলিশের। প্রত্যেকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই।
পরীক্ষা চলাকালীন সময় জেরক্সের দোকানগুলি বন্ধ থাকবে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই লাউড স্পিকার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। মোবাইল ফোন বা কোনওরকমে ইলেকট্রনিক গেজেট পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে নিয়ে যেতে পারবেন না।
পর্যাপ্ত পানীয় জল ও শৌচাগারের জন্য প্রত্যেকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে প্রত্যেকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে। প্রশ্নপত্র পৌঁছনোর আগেই প্রত্যেকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়ন করতে হবে। পরীক্ষার দিনে পর্যাপ্ত পরিবহণ ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে পরীক্ষার্থীদের কোনওরকম সমস্যা না হয়।
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদেরও মোতায়েন করতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে যাতে কোনও পরীক্ষার্থীর যদি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। অগ্নিসুরক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে হবে ওই দিন।
পাশাপাশি পরীক্ষার দিনে যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না হয় তার জন্য বিদ্যুৎ দফতরকে বিশেষ নির্দেশ রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের। প্রত্যেকটি স্কুল কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের জানাতে হবে যাতে পরীক্ষার আগের থেকেই পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি পাওয়া যায়।
পরীক্ষার দিনে ট্র্যাফিক ব্যবস্থার ওপর বিশেষভাবে নজর দিতে হবে পুলিশকে। মোট ১৬ দফা গাইডলাইন প্রতিটি জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনারকে পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে। সূত্রের খবর, এই গাইডলাইন পাঠানোর পর জেলাগুলির সঙ্গে একটু ভার্চুয়াল বৈঠক করতে পারে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর।