পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ইসলাম এবং সন্ত্রাসকে সমার্থক করে দেখানোর চেষ্টা নয়া নয়। বহু কাল ধরেই এই চেষ্টা চলে আসছে। পশ্চিমা মিডিয়ার কল্যাণে ইসলাম সম্পর্কে একটা নেতিবাচক বার্তা কৌশল করে ছড়ানো হয়েছে। সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা তো বটেই, একই সঙ্গে ছদ্ম ধর্ম নিরপেক্ষ ব্যক্তি, দল ও সংগঠনগুলিও ইসলাম ও সন্ত্রাসকে সরাসরি কিংবা ইঙ্গিতে ইসলাম ও সন্ত্রাসের মধ্যে যুগসূত্র প্রমাণের নির্লজ্জ চেষ্টা করেছে।
রাজস্থানের জয়পুর সম্প্রতি এমনই এক অবমাননাকর ঘটনায় তোলপাড় হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এমএ ফাইনাল ইয়ারের “আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু শীর্ষক’ পেপারে যে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে তা অত্যন্ত অমর্যাদাকর। সেখানে পড়ুয়াদের প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘ইসলামী সন্ত্রাসবাদ বলতে কী বোঝ? উত্তরের জায়গায় বইয়ের লেখক লিখেছেন, ‘ইসলামী সন্ত্রাসবাদ এমন জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হল বহু দেশ মনে করে সন্ত্রাসবাদ হল ইসলামের পথ।’
ইসলাম এবং সন্ত্রাসবাদকে সমার্থক করে দেখানোর প্রবণতা ‘রুটিন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবথেকে মারাত্মক হল স্কুল ও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য পুস্তকে পুড়ুয়াদের মনে ইসলাম সম্পর্কে এমন ভুল ধারণা সচেতনভাবে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে। সচেতন ধর্মনিরপেক্ষ লোকজন এমনটাই মনে করছেন।
এর আগে জয়পুরের অন্য এক পাবিলিসার্স একই কাণ্ড করেছিল। এবার যা করল সঞ্জীব প্রকাশনী। রাজস্থানের মুসলিম কাউন্সিল এই প্রকাশনীর বিরুদ্ধে স্থানীয় ছটি চোপাড় কোতোয়ালি থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন।
এমন ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সঞ্জয় প্রকাশনীর মালিক তেজপাল জৈন বলেছেন, ‘বইটির লেখক ঠিক কী লিখেছিলেন, আমরা তা জানি না। আমরা একটি বই থেকে এই অংশটি নিয়ে একটি প্রশ্নমালা তৈরী করেছি। বইটিতে ‘একসপ্তাহের ধারাবাহিক প্রশ্নমালা’ ছিল। একটি বই থেকে এই প্রশ্ন ও উত্তর সরাসরি তোলা হয়েছিল। আমাদের বইয়ের বিষয়বস্তু যদি কাউকে আঘাত করে তবে আমরা দুঃখিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘এক সপ্তাহ সিরিজের প্রশ্নমালা, যা বাজারে চলে গিয়েছে, সে সব বই আমরা ফিরিয়ে নিচ্ছি। কোনও ধর্মের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নেই। এই ধরণের ঘটনা আমার বরদাস্ত করব না।’
জামায়াতে ইসলামী হিন্দ রাজস্থানের সেক্রেটারি নঈম রাব্বানী বলেছেন, ‘আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ইসলামের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্র দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। আমরা আগেও মামলা করেছি। কিন্তু কিছুই হয়নি। কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন এই নয়া ঘটনা সামনে এসেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাঠ্য বইয়ে ইসলামকে বিকৃত করে নতুন প্রজন্মের মনে বিদ্বেষ তৈরী করতে চায়। এই ধরণের লেখা ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের মনে কেবল মানুষের সম্পর্কে শত্রুতায় বাড়াবে। ‘