পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কিত একটি ট্যুইট করে বিপাকে পড়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখেল। কয়েকদিনের মধ্যে তাকে যেভাবে গুজরাত পুলিশ হেনস্তা করেছে তা নজিরবিহীন। জয়পুর বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করার দু’দিন পর তাকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। জামিনের কয়েক ঘণ্টা পর ফের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ফের তাকে জামিন দেওয়া হয়। এর মধ্যে নিশ্চিতভাবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসার গন্ধ পাচ্ছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। সাকেত শনিবার দাবি করেছেন, বিজেপির নির্দেশেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মোরবি পরিদর্শনকে তিনি নিশানা করেছিলেন ট্যুইটে। তাতেই প্রধানমন্ত্রী ‘আহত’ হয়েছিলেন। সেখানে যে ব্রিজ ভেঙে ১৩৫ জনের মৃত্যু হল প্রশাসনিক গাফিলতির জন্য, তাতে মোদি ব্যথিত হননি,ছাড়া পেয়েই এমন চাঞ্চল্যকর মন্তব্য গোখেলের।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই মুখপাত্র যে গ্রেফতারিতে ভয় পেয়ে যাননি, তা তার বাচনভঙ্গি থেকেই স্পষ্ট। সোজাসাপটা ব্যাট চালিয়ে সাকেতের নির্ভীক মন্তব্য, মোদি একটি ট্যুইটে আহত হয়েছেন। ১৩৫ জন নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুতে তিনি ব্যথিত হননি। তিনি আরও যোগ করেছেন, আমাকে বিজেপির নির্দেশেই গ্রেফতার, জামিন, ফের গ্রেফতার ও ফের জামিন দেওয়া হয়েছে। সবকিছুই ঘটেছে ৪ দিনের মধ্যে। আমার স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখার জন্য মাননীয় বিচারপতিদের কাছে কৃতজ্ঞ।
জেলের বাইরে বেরিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন সাকেত। গুজরাতে অমিত শাহ, হিমন্ত বিশ্ব শর্মাসহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা যেভাবে নির্বাচনী প্রচারের সময় সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন তার উল্লেখ করে সাকেত জানান, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এমনকি ভোটের দিন মোদি রোড শো করলেও সেটা মাফ হয়ে যাচ্ছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব ও বিজেপির অভিনেতা-সাংসদ পরেশ রাওয়াল জনসমক্ষে বিদ্বেষী বক্তৃতা দিয়েও রেহাই পাচ্ছেন। এমনকি যারা ত্রুটিপূর্ণ ব্রিজ নির্মাণে অভিযুক্ত ওরেভা কোম্পানির মালিকদেরও কিছু হয়নি। আমি ট্যুইট করলেই সেটা অপরাধ!
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোররাতে জয়পুর বিমানবন্দর থেকে সাকেতকে গ্রেফতার করেছিল গুজরাত পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আহমদাবাদের একটি আদালত। বৃহস্পতিবার জামিন পেয়েছিলেন সাকেত। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ৮টা ৪৫ নাগাদ ফের তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যখন তিনি আহমদাবাদের সাইবার থানা ছেড়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই পুলিশ টিম কোনও ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাকে গ্রেফতার করে। সাকেতের গ্রেফতারিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে অভিহিত করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।