শফিকুল ইসলাম, মুহাম্মদ মুস্তাক আলি: মুর্শিদাবাদ জেলা ভেঙে তিনটি জেলা হলেও, সেই তিনটি নামের ক্ষেত্রেই ‘মুর্শিদাবাদ’ শব্দটি যুক্ত থাকার আশ্বাস দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই দাবি করলেন তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ-বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান তথা সাংসদ আবু তাহের খান। তিনি দিল্লিতে নেত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বলে জানান।
আবু তাহের বলেন, ‘আমি এবং জেলার আর এক সাংসদ খলিলুর রহমান দলনেত্রীকে মানুষের আবেগের কথা বলেছি। বলেছি, জেলার সব অংশের মানুষই চান ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদের নামের সঙ্গে তাঁদের ঠিকানা জুড়ে থাকুক। কথা বলার সময় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। সুদীপবাবু মুর্শিদাবাদেরই ভূমিপুত্র।’
এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি গত বৃহস্পতিবার দলের সাংসদদের সঙ্গে একটি বিশেষ বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকের মাঝেই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বিভাজিত জেলার সঙ্গে মুর্শিদাবাদ নামটা অক্ষুন্ন রাখার আবেদন জানান। সেই সময় তৃণমূলের অন্যান্য সাংসদদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদের দুই তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান এবং আবু তাহের খাঁন।
খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদবাসীর ভাবাবেগ এবং জেলার ইতিহাসের কথা মনে রেখে বিভাজিত জেলার প্রতিটি অংশের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ শব্দটিকে জুড়ে রাখার আবেদন দলনেত্রীকে জানানো হয়। প্রস্তাবটি ধৈর্য্য সহকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুনেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা ভাগের ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদ নামটি জুড়ে রাখার আশ্বাস দিয়েছেন। সাংসদ আবু তাহের খানও একই ধরনের বক্তব্য জানিয়েছেন।
দিন দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাতটি নতুন জেলা ঘোষণা করেন। তারমধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় আরও দু’টি জেলা বহরমপুর ও জঙ্গিপুরে ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার পর বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বিষয়টির বিরোধিতা করেন। মুর্শিদাবাদ নামটি অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে তিনি সরব হন।
সরকারের বক্তব্য, মুর্শিদাবাদ জেলা ভেঙে তিন জেলা হলে, প্রশাসনিক কাজকর্মে অনেকটাই সুবিধা হবে। তবে ঐতিহাসিক নবাবি আমলের জেলা ভাঙলে ঐতিহ্যে আঘাত লাগবে, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, মুর্শিদাবাদ জেলার নাম মুছে বাংলার ইতিহাসকে মুছে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে।
সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এখনও জেলা গঠনের কাজ শুরু হয়নি। যখন নতুন জেলা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে তখন মুর্শিদাবাদের মানুষদের দাবি অবশ্যই বিবেচনা করা হবে।