আবদুল ওদুদ: আর মাত্র কয়েক মাস। তার পরই রাজ্যে রয়েছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক সংহিসতায় মৃত্যু হয় সাধারণ মানুষদের। গত কয়েকমাস ধরে রাজ্য রাজনীতিতে শাসকও বিরোধীদের মধ্যে যে বাগবিতণ্ডা চলছে তাতে সহজেই বুঝে নেওয়া যায় এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়তো অতীতের সমস্ত নির্বাচনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আশপাশের এলাকায় যেভাবে বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে তা বেশ উদ্বেগের। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সংঘর্ষ লেগেই রয়েছে। গত নভেম্বর মাসের দিকে লক্ষ করলে বোঝা যাবে- রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী পর্যায়ে রয়েছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদেরও প্রাণ যাচ্ছে এই রাজনৈতিক সংহিসতায়।
গত নভেম্বর মাসে ছোট বড় মিলিয়ে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংহিসতার ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। আর ডিসেম্বরের শুরুতেই বোমা বিস্ফোরণে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। বিস্ফোরণে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে তিনজনের দেহ। গত নভেম্বরে যে পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগণার নৈহাটির তৃণমূল কর্মী মুহাম্মদ জাকির হোসেন। তৃণমূলের এই কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়। এর পর চলে অবাধে বোমাবাজি। যদিও এই ঘটনায় তাপস দে সহ আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। ৫ নভেম্বর বীরভূমের সিউড়িতে বাড়িঘাটের দখল নিয়ে রাজনৈতিক সংহিসতায় মৃত্যু হয় তরুণ যুবক সেখ সাইদুরের। তিনিও রাজনৈতিক সংহিসতার শিকার।
এর পর গত ২২ নভেম্বর উত্তর ২৪ পরগণার দেগঙ্গার চাঁপাতলার বাসিন্দা তৃণমূলকর্মী মিজান রেজা চৌধুরীর মৃত্যু হয়। ওই দিনই বসিরহাটের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে গুলিবিদ্ধ হয় পুলিশ কনস্টেবল প্রভাত সর্দার। ২৫ নভেম্বর নদিয়ার সাদিপুরের তৃণমূল নেতা মোতিরুল বিশ্বাসকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এলাকার অত্যন্ত দাপুটে এই নেতার মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদে। নিহত মোতিরুল বিশ্বাসের বাড়ি নদিয়া হলেও তাঁর ছেলে আবাসিক স্কুলে পড়াশোনা করায় মুর্শিদাবাদের নওদায় এসেছিলেন দেখা করার জন্য। দুষ্কৃতীরা সেখানেই তাঁর উপর হামলা চালিয়ে খুন করে।
অন্যদিকে, ২৯ নভেম্বর আসানসোলের বারাবনিতে বিজেপি নেতার দাদা রাম কোড়ারকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি রাজনৈতিক সংহিসতার শিকার বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। অন্যদিকে, ডিসেম্বর শুরুতেই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে সেখানে ৩ জনই প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না, বিশ্বজিৎ গায়েন ও লালু মান্না নামে দুই তৃণমূলকর্মী। এই বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।