পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আল-কুরআনের সম্মান রক্ষায় মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানালেন বাহরাইন ও ইরানের বিদেশমন্ত্রী। ওআইসি আয়োজিত বিদেশমন্ত্রীদের জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বাহরাইনের বিদেশমন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ বিন রশিদ আল জায়ানি বলেন, ‘আল-কুরআনের সম্মান রক্ষায় মুসলিম বিশ্বকে অবশ্যই আইনি ও রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। কুরআন অবমাননা থামাতে হবে এবং তা যেন পুনরায় না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এরই সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সহনশীলতার শিক্ষা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি যত্নবান হতে হবে। কুরআন অবমাননা আন্তর্জাতিক শিষ্টাচার ও আইনের পরিপন্থী। এটা ঘৃণা, চরমপন্থা ও বিশৃঙ্খলাকে উৎসাহিত করে।’
একই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসাইন আমির আবদুল্লাহিয়ান। তিনি কুরআনসহ ইসলাম ধর্ম অবমাননাকে ‘অপরাধ’ হিসেবে ঘোষণার জন্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যে কোনও পর্যায়ে এ ধরনের ঘটনাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
সম্প্রতি সুইডেন এবং ডেনমার্কে পবিত্র কুরআনের চরম অবমাননার পর ইরাক এবং সউদি আরবের অনুরোধে জরুরি বৈঠকে বসে ৫৭ মুসলিম দেশের জোট ওআইসি। ভিডিয়ো লিঙ্কের মাধ্যমে এতে যোগ দিয়ে ইরানি বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের কিছু দেশে ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার প্রবণতা বেড়েছে। এসব কাজে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সমর্থন রয়েছে, যা বড় রকমের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তাঁর কথায়, ‘বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলিমের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে ঘৃণা এবং বিদ্বেষমূলক তৎপরতা ও পবিত্র কুরআনের এই অবমাননা অত্যন্ত উদ্বেগ তৈরি করেছে।’
ইরানি বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই ধরনের কর্মকাণ্ড মূলত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সমঝোতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের চেতনাকে ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়ে চালানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিশেষ করে মুসলিমদের সংস্কৃতি এবং ধর্মকে খাটো করে দেখা হচ্ছে। যার মাধ্যমে মানবাধিকারের প্রতিও অসম্মান করা হচ্ছে।’ কথিত বাক-স্বাধীনতার নামে মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে এভাবে অবমাননা করার জন্য আমির আবদুল্লাহিয়ান গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। ওআইসির বৈঠকে ইরানের বিদেশমন্ত্রী দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি কুরআনের অবমাননাকে ‘অপরাধ’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান এবং ওআইসি’র একটি প্রতিনিধি দলকে সুইডেন ও ডেনমার্কে পাঠানোর প্রস্তাব দেন যাতে কুরআন অবমাননা রোধে ওই দেশ দুটির সরকারের সঙ্গে কথা বলা যায় এবং ইসলামের শান্তির বাণী প্রচারিত হয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ওআইসি দেরিতে বৈঠকের আয়োজন করলেও তাদের অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে, কুরআন অবমাননা ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সুইডেন ও ডেনমার্কের সম্পর্ক আরও খারাপ হতে চলেছে। এদিকে, ইউরোপের বুকে ভবিষ্যতে কুরআন অবমাননা রুখতে ওআইসির সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।