পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বিতর্ক জল্পনা উড়িয়ে সংসদ ভবনের উদ্বোধন হয়ে গেল। রবিবার সকালেই নয়া পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের শাসনব্যবস্থার সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদাধিকারী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এই অনুষ্ঠানে ডাক পাননি। এর প্রতিবাদে দেশের প্রথম সারির ২০টি দল এই যাগযজ্ঞপূর্ণ অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। ফলে জৌলুস হারায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবি¨, কিছু ক্যাবিনেট মন্ত্রী, স্পিকার ওম বিড়লা, যোগী আদিত্যনাথ, একনাথ শিণ্ডে, জগনমোহন রেড্ডিরা। তবে তাতে বিচলিত হননি মোদি। প্রচারের আলো একাই কেড়ে নিয়েছেন নানান ভঙ্গিমায়। হয় ‘সর্বধর্ম’ প্রার্থনাও। সেখানে কুরআন তিলাওয়াতও করা হয়। সূরা আর রহমানের কিয়দংশ পাঠ করা হয়। যদিও পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল হিন্দুত্বের ছোঁয়া। যজ্ঞের পর লোকসভা স্পিকারের চেয়ারের কাছে সেঙ্গল স্থাপন করে এটিকে দিলেন রাজদণ্ডের স্বীকৃতি।
বিজেপির দাবি, ব্রিটিশদের ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক এটি। তবে কংগ্রেসের শশী থারুর জানিয়েছেন, এমন কিছু ইতিহাসে নেই যেখানে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে নেহরুকে এই দণ্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এটি আমাদের ঐতিহ্য। স্বাধীন ভারতে সেটা পুনরায় স্থাপিত হল রাজতন্ত্রের ছদ্মবেশে। এরই মধ্যে একটি ছবির ডান দিকে নতুন সংসদ ভবন, বাঁ-দিকে একটি কফিনের ছবি দিয়ে বিতর্ক উসকে দিয়েছে লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি। সকালেই আরজেডির পক্ষে একটি ট্যুইট করা হয়। ওই ট্যুইটের সঙ্গেই ছবিটি ছিল।
আরজেডি-র এক নেতা বলেন, গণতন্ত্রকে কবর দেওয়া হচ্ছে সেটা বোঝাতেই ট্যুইটে কফিনের ছবি দেওয়া হয়েছে। দেশ এই সংসদ ভবনকে মেনে নেবে না। সংসদ ভবনকে এমন আদল দেওয়া হয়েছে, তা দেখতে ঠিক কফিনের মতোই লাগছে।
শরদ পওয়ার বলেন, ‘আমি সকালে অনুষ্ঠানটি দেখেছি। আমি খুশি যে ওই অনুষ্ঠানে যাইনি। ওখানে যা হল, তা দেখে আমি চিন্তিত। আমাদের দেশ কি পিছিয়ে যাচ্ছে? সীমিত সংখ্যক মানুষের জন্য় কি এই অনুষ্ঠান ছিল?
এই অনুষ্ঠানে শাসক-বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু কংগ্রেস সহ ২০টি দল অনুষ্ঠান বয়কট করে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপিও। রবিবার সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সামিল না হওয়া নিয়ে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার কে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, “আমি খুশি যে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে যাইনি।”
অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি সংসদে পুজো ও সেঙ্গোল প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আমি সকালে অনুষ্ঠানটি দেখেছি। আমি খুশি যে ওই অনুষ্ঠানে যাইনি। ওখানে যা হল, তা দেখে আমি চিন্তিত। আমাদের দেশ কি পিছিয়ে যাচ্ছে? সীমিত সংখ্যক মানুষের জন্য় কি এই অনুষ্ঠান ছিল?” এনসিপি সাংসদ তথা শরদ পওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলেও নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ‘অসম্পূর্ণ’ বলে আখ্যা দেন বিরোধী দল না থাকার কারণে।