পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সমাজ আধুনিক হয়েছে, কিন্তু পণপথা থেকে বের হতে পারেনি! শিক্ষিত সমাজের অন্দরে ঘূণপোকার মতো এখনও ঢুকে রয়েছে এই অভিশপ্ত প্রথা। সেই পণপথার জন্যই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন কেরলের তিরুবনন্তপুরমের এক ২৬ বছরের তরুণী চিকিৎসক। তার চিকিৎসক প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃতার নাম শাহানা। পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ে ঠিক হওয়ার পরে শাহানার শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে পণের দাবি করা হয়। শাহানার পরিবার সেই দাবি পূরণ করতে অসমর্থ হয়। সেই কারণে শাহানাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন তার চিকিৎসক প্রেমিক। এর পরেই আত্মহত্যা করেন শাহানা। গত ৫ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার শাহানার দেহ উদ্ধার হয়। শাহানা তিরুবনন্তপুরম মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগে পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের ছাত্রী ছিলেন।
শাহানার পরিবারের অভিযোগ, তার হবু শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে সোনার গয়না, জমি, বিএমডাব্লু গাড়ির দাবি করা হয়। শাহানার পরিবার তাদের দাবির পূরণ করতে পারেনি। তখনই তার প্রেমিক জানিয়ে দেন এই বিয়ে সে করতে পারবে না। এর পরেই শাহানা চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের জীবন শেষ করে দেন। শাহানার হবু স্বামী একজন চিকিৎসক। তিনি পিজি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি ছিলেন।
শাহানার বাবা মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি মারা যান। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। বুধবার রাতে শাহানার হবু স্বামী চিকিৎসক রুইসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা গর্গ মহিলা ও শিশু উন্নয়ন বিভাগকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। কেরল মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সাথীদেবী বুধবার শাহানার বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাথীদেবী এই মামলার তদন্ত দাবি করেছেন, সেইসঙ্গে পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতিবেদন চেয়েছেন। সাথীদেবী বলেন, অভিযুক্ত চিকিৎসকের পরিবার নির্যাতিতার কাছে যৌতুক দাবি করেছে বলে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করা হবে।
রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনও বিষয়টি নিয়ে মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে নিজের থেকে একটি মামলা শুরু করেছে। অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, মেডিকেল পিজি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন তাকে তাদের সংগঠনের সমস্ত দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করেছে।