উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : জয়নগরের তৃণমূল নেতা খুনের মূল মাস্টারমাইন্ড সহ তার সঙ্গী গ্রেফতার।এবারে উঠে আসবে আসল কারণ। জয়নগরের তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় মূল “মাস্টারমাইন্ড” আনিসুর রহমান লস্কর গ্রেফতার। পরিকল্পনা ছিল খুনের পর মুর্শিদাবাদের পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করার। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না পুলিশের জালে অবশেষে গ্রেপ্তার হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্কর খুনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ও অন্যতম অভিযুক্ত সিপিআইএম নেতা আনিসুর রহমান লস্কর।
পুলিশের জালে গ্রেপ্তার আনিসুরের অন্যতম সাগরেদ কামাল উদ্দিন ঢালী। তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্কর কে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১৫ দিন আগে মন্দির বাজারের ট্রেক পাজা এলাকায় নাসির হালদার ওরফে বড় ভাইয়ের বাড়িতে। সাইফুদ্দিনকে খুন করার জন্য আনিসুর রহমান “বড় ভাইকে” প্রায় এক লক্ষ টাকা দেয়। তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিনকে খুন করার বেশ কয়েকদিন আগে সাইফুদ্দিনের খুঁটিনাটি নখ দর্পনে রাখছিল। আনিসুর ও তার দলবল। সুযোগ বুঝে কালীপুজোর পরের দিন সোমবার বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুটি বাইকে মোট পাঁচজন এসে তৃণমূল নেতা কে খুন করে। খুনের পর পরিকল্পনা মাফিক এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয় সিপিআইএম নেতা আনিসুর রহমান লস্কর। তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করের খুনের অন্যতম অভিযুক্ত ছিল এই নাসির উদ্দিন রহমান লস্কর।
এমনকি FIR নামও থাকে এই আনিসুর রহমান লস্করের। এরপর অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযানে নামে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ। তৈরি করা হয় বিশেষ প্রতিনিধি দলের। এরপর আনিসুর রহমান লস্করের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা হয়। টাওয়ার লোকেশনে প্রথমে আনিসুর রহমানের সিগনাল পাওয়া যায় বাসন্তী থানায় এলাকায়। এরপর বিশাল পুলিশ বাহিনী ওই এলাকায় হানা দেয় কিন্তু ততক্ষণে আনিসুর গা ঢাকা দিয়েছে। এরপর আনিসুরের পরিকল্পনা ছিল পুলিশের নজর বাঁচিয়ে নদীয়া হয়ে গাড়িতে করে মুর্শিদাবাদে পৌঁছে যাওয়ার।
সেই পরিকল্পনা মাফিক ১১ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি চার চাকা গাড়ি ভাড়া করে আনিসুর। এরপর বৃহস্পতিবার নদিয়া থেকে গাড়িতে করে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু ততক্ষণে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশের কাছে সমস্ত তথ্য চলে আসে। এরপর বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ রানাঘাট থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্তকে রানাঘাট থেকেই গ্রেফতার করে। শুধুমাত্র আনিসুর রহমান লস্কর ওই গাড়িতে ছিল না ওই গাড়িতে ছিল কামালউদ্দিন ঢালী সহ আরো দুজন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
এ বিষয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালী তিনি বলেন, জয়নগরের তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমান লস্কর কে আমরা গ্রেফতার করেছি এই ঘটনায় আনিসুরের পাশাপাশি এই খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত কামাল উদ্দিন ঢালীকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এছাড়াও দুজনকে আমরা আটক করেছি। জয়নগরের তৃণমূল নেতা খুন কাণ্ডে তিনজন গ্রেপ্তার হলো। এখনো পর্যন্ত নাসির হালদার ওরফে বড় ভাইয়ের খোঁজে আমরা তল্লাশি চালাচ্ছি। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের পর এই খুনের পিছনে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তা আমরা কিনারা করতে পারব।আর উঠে আসবে খুনের আসল তথ্য।