নয়াদিল্লি • ৭ অক্টোবর: চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর স্বায়ত্ত শাসন এলাকার ১০ লক্ষ মুসলিম নির্যাতনের শিকার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফাঁকা জেলখানায় থাকতে বাধ্য করা হয়েছে পুরুষদের। মহিলাদের বন্ধ্যাত্বকরণ ও যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ধর্মীয় অনুশীলন বন্ধ করা হয়েছে আর তাদের ধর্ম পরিচয় মুছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে পুরোদমে।
রাষ্ট্রসংঘে উইঘুর নিয়ে আলোচনার দাবি জানানো হচ্ছে ২০১৭ সাল থেকে। বৃহস্পতিবার ছিল আলোচনা নিয়ে প্রথম খসড়া প্রস্তাবের ভোট। ৪৭ সদস্য দেশের মধ্যে খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট ১৭ এবং বিপক্ষে ভোট ১৯। ফলে বাতিল হয়ে যায় উইঘুর নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব। ভারত-সহ ১১টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। আর এই নিয়ে বিরোধীতায় সরব হয় দেশের বিরোধী নেতারা। শুক্রবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচিকে সাংবাদিক বৈঠক করে জানাতে হয় উইঘুর মানবাধিকার নিয়ে বিরত থাকার কারণ। সেইসঙ্গে বাগচি জানায় উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকারকে সম্মান জানানো উচিত সকলের। উইঘুরদের মানবাধিকার রক্ষার গ্যারান্টিও দিতে হবে। চিনের বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থাকলেও ভারত মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে নিজেদের দৃঢ় সংকল্পের কথা ঘোষণা দিল। উইঘুরদের উপর চিন সরকারের চরম নির্যাতন ও মানবাধিকার হরণ নিয়ে উইঘুরদের পাশে দাঁড়াতে চাইল ভারত। বাগচি বলেন, আমি আশা করি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি এই সমস্যার সঠিক সমাধানে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবে। ভারত মানবাধিকারকে সম্মান জানায়।
কোনও দেশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভারত সমর্থন করে না, সেজন্য ভোটদানে বিরত ছিল। তবে ভারত শিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে রাষ্ট্র সংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনেছে। উল্লেখ্য, মানবাধিকার সংগঠনগুলি চেয়েছিল উইঘুর নির্যাতন নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে আলোচনা হলে কিছুটা চাপে পড়বে চিন, হয়তো হয়রানি কিছুটা লাঘব হবে।
কিন্তু চিনের জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতায় প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৯ দেশের। তাদের মধ্যে রয়েছে চিন, বলিভিয়া, ক্যামেরুন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, গ্যাবন,
ইন্দোনেশিয়া, আইভরি কোস্ট, কাজাখস্তান,
মৌরিতানিয়া, নামিবিয়া, নেপাল, পাকিস্তান, কাতার, সেনেগাল, সুদান, আরব আমীরশাহী, উজবেকিস্তান ও ভেনেজুয়েলা। খসড়া প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছিল আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, তুরস্ক-সহ কয়েকটি দেশ। এই প্রস্তাব পাস না হওয়ায় মানবাধিকার সংস্থাগুলি কিছুটা ম্রিয়মান।
তাদের বক্তব্য, অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মানবাধিকার আর এটা খুবই উদ্বেগজনক বিশ্ব মানবের জন্য। আরও উল্লেখ্য, ভোট দানে ভারতের সঙ্গে বিরত ছিল মালয়েশিয়া, লিবিয়া, মালয় এবং গাম্বিয়া।