পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: এমন এক সকালে যখন বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের জয় নিয়ে খবর করতে মিডিয়ার উন্মাদনার শেষ নেই। সেই সময়ই উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে পড়ে মৃত্যুর দিন গুনছেন ৪০ জন শ্রমিক। আঞ্চলিক হিন্দি নিউজ চ্যানেলগুলির সিংহভাগ দর্শক উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং হরিয়ানার মানুষ। সুড়ঙ্গ দুর্ঘটনার খবরের এক ঝলক দেখিয়েই চ্যানেলগুলি পৌঁছে যাচ্ছে গাজার খবর থেকে শুরু করে ‘কর্মযোগী মোদি’ পর্যন্ত। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ থেকে অযোধ্যার গৌরবের ভূরিভূরি খবরে। গাজায় ইসরাইলি সেনা কীভাবে সুড়ঙ্গ অনুসন্ধান করছে দেখাতে হিন্দি চ্যানেলগুলির যতটা উৎসাহ, ঘরের এত কাছে সুড়ঙ্গে আটকা পড়া ৪০ শ্রমিক নিয়ে কি তারা ততটা আন্তরিক?
দশর্করা আশা করছিল, নিউজ চ্যানেলগুলি আটকা পড়া শ্রমিকদের দুর্দশার দিকে মনোযোগ দেবে। কিন্তু নেটওয়ার্ক ১০, নিউজ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া ডেইলির মত হিন্দি খবরের চ্যানেলগুলি দুর্ঘটনাস্থল থেকে কোনও লাইভ করছে না এবং উদ্ধার অভিযানের কোনও রিপোর্টও করছে না।
ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি বা যোগীজি বিজ্ঞাপনী প্রপাগাণ্ডায় ব্যস্ত। এর মধ্যে রয়েছে ‘খেলেগা ইউপি আগে বড়েগা ইউপি’র মতো বিজ্ঞাপন। কোনও চ্যানেলই আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্বিগ্ন পরিবারের খোঁজ করার প্রয়োজন বোধ করেনি। কোনও কোনও চ্যানেল পরিবারগুলির বিক্ষোভের ফুটেজ দেখালেও তুলনামূলকভাবে দেশ নিউজ, ইন্ডিয়া ভয়েজ, প্রাইম নিউজ, হার খবর, খবর ইয়েটের মতো আঞ্চলিক চ্যানেলগুলি গাজা বা ইসরাইলের শোকাহত পরিবারের ফুটেজে ভরা। গাজার হাসপাতালের ভিডিয়োয় দেখানো হচ্ছে, ইসরাইলি সুরক্ষা কর্মীরা দাবি করছে হামাস ইসরাইলিদের কীভাবে বন্দি করে রেখেছে। পরক্ষণেই চলে যাচ্ছে হিমাচল প্রদেশের হামিদপুরে যেখানে পণের জন্য গৃহবধূ বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।
আসলে, স্থানীয় অপরাধ এবং গাজা যুদ্ধই টিআরপি বাড়াতে বাড়ে।