লখনউ: সিসোলা উত্তরপ্রদেশের মিরাটের একটি পিছিয়ে পড়া গ্রাম। গ্রামে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র এবং শিশুশ্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে। ছেলে-মেয়েরা তাদের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য ফুটবল তৈরির কারখানায় কাজ করে।
১৯ বছর বয়সি হিনা সাইফি যখন অষ্টম শ্রেণি পাশ করে, তখন তাকে পরিবার ও প্রতিবেশীরা পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বলে। তারা তাকে গ্রামের বাইরে স্কুলে যেতে দিতে প্রস্তুত ছিল না। যাইহোক, তার মা ফরিদা হিনাকে খাতৌলিতে তার খালার বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন যেখানে সে দুই বছর থেকে দশম শ্রেণি পাশ করেছিল। যখন হিনা বাড়ি ফিরে আসল, তখন তাকে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার জন্য একই চাপের সম্মুখীন হতে হয়েছিল৷ কিন্তু কোনওভাবে সে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করতে পেরেছিল। স্কুলে থাকাকালীন হিনা একটি ফুটবল কারখানায়ও কাজ করছিল যেখানে প্রতি মাসে নগদ ১৫০০-২০০০ টাকা উপার্জন করত। তার উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশোনা শেষ করার পর পরিবার তাকে বলেছিল যে তারা তাকে কলেজে পাঠানোর সামর্থ্য রাখে না৷ তার পড়াশোনা বন্ধ৷ তাকে লড়তে হয়েছিল। এরপর মুকেশ কুমার নামে এক এনজিও কর্মী হস্তক্ষেপ করেন বিষয়টিতে। হিনার পরিবার যাতে তাকে স্কুলে ফিরতে দিতে রাজি হয় সেজন্য তিনি নানাভাবে চেষ্টা করেন৷ অবশেষে হিনা একটি বেসরকারি কলেজে ফি মকুবের মাধ্যমে ভর্তি হয়৷ সেই হিনা আজ তার পরিবার ও গ্রামকে গর্বিত করে তুলেছে৷ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের ভারতীয় ইউনিট ঘোষণা করেছে যে হিনা ১৭ জন জলবায়ু পরিবর্তন নেতাদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন যারা রাষ্ট্রসংঘ ভারতের নতুন অভিযানের মুখ হবে৷ ক্যাম্পেনের নাম ‘উই দ্য চেঞ্জ নাও’৷
রাষ্ট্রসংঘের মতে, এই উদ্যোগের লক্ষ্য ভারতের জলবায়ু ক্ষেত্রে নেতৃত্বের মধ্যে তরুণ ভারতীয়দের মাধ্যমে জলবায়ু সমস্যার সমাধান প্রদর্শন করা। ১৭ জন তরুণ চ্যাম্পিয়ন ওয়েবসাইটে তাদের জলবায়ুসংক্রান্ত কাজের গল্প শেয়ার করে এই আন্দোলনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানাবে সাধারণ মানুষকে৷ হিনা এ জন্য নির্বাচিত হওয়ায় খুশি এবং উত্তেজিতও বটে। সে জানিয়েছে, আমি আমার লোকদের দেখাতে চেয়েছিলাম যে একটি মেয়ে কী করতে সক্ষম এবং আমি আশা করি আমি তাদের অনুপ্রাণিত করতে পারব এবং তাদের মেয়েদের স্কুলে যেতে দেবে৷