পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ জম্মুকাশ্মীর হাইকোর্ট একটি সংবাদ প্রতিবেদনের জন্য এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজ করে দিয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে পুলিশকে একহাত নিয়েছে আদালত৷ হাইকোর্টের মন্তব্য, এই ধরনের এফআইআর আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়, যা পুলিশের পক্ষ থেকে বিদ্বেষ প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে। ঘটনাটি ২০১৮ সালের৷ ওই সাংবাদিক একজন ব্যক্তির নির্যাতনের বিষয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন৷ সেই ব্যক্তির আত্মীয়র মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে তিনি এই প্রতিবেদন লিখেছিলেন৷ পুলিশ এই প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছিল এবং দাবি করেছিল যে তিনি জনসাধারণকে রাস্তা অবরোধ ও ভাঙচুরের জন্য উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এদিন জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্ট আসিফ ইকবাল নায়েকের বিরুদ্ধে করা এফআইআরটি খারিজ করার নির্দেশ দিয়েছে৷
নায়েক কিশতওয়ার জেলার বাসিন্দা এবং তাঁর একটি নিবন্ধ জম্মু পত্রিকা ‘আর্লি টাইমস’-এ ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ -এ প্রকাশিত হয়েছিল৷
ওই বছরের ১২ মে কিশতওয়ার পুলিশ নায়েকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করে। পরে সাংবাদিক তার বিরুদ্ধে হওয়া এফআইআর বাতিল করার আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদনে তিনি জানান, এই মামলাটি কণ্ঠরোধ করার জন্য দায়ের হয়েছে৷ পুলিশ তাকে বেআইনি ভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনও সংবাদ প্রকাশ করতে বাধা দিতে চেয়েছিল। নায়েক আরও বলেন যে তার বিরুদ্ধে এই এফআইআর নিবন্ধন ‘আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার’৷ সেই সুরেই হাইকোর্টও কথা বলেছে এদিন৷
তিনি আরও বলেছিলেন যে দায়ের করা এফআইআরে অভিযোগগুলি এত অযৌক্তিক এবং অসম্ভব যার ভিত্তিতে কোনও বিচক্ষণ ব্যক্তি কখনওই ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে না যে তার বিরুদ্ধে মামলা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।এদিন বিচারপতি রজনীশ অসওয়ালের একক বেঞ্চ বলে, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের এফআইআর নথিভুক্ত করা ‘নিঃসন্দেহে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর আক্রমণ’। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে প্রেসকে প্রায়শই গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। ভারতের মতো যেকোনও গণতান্ত্রিক দেশের কার্যক্রমে প্রেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর কোনও বাধা দেওয়া যাবে না৷ তিনি একটি শনাক্তযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র৷