পারিজাত মোল্লাঃ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল নবান্নের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলার শুনানি। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বরাদ্দের প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা নয়ছয় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সত্য জানতে এই সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যের অর্থসচিবকে জোড়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
পাশাপাশি যে কেন্দ্রীয় সংস্থা ক্যাগ রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাদেরও এই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পাঠানো কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।তবে রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ে নয়, সাংবাদিক পরিচয়ে। শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে সিবিআই তদন্তেরও দাবি করেছিলেন তিনি। বাকি মামলাকারীরা হলেন আইনজীবী সুমনশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী ঋত্বিক পাল। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলাটি দায়ের করা হয়। তাঁদের আবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩১ মার্চ, ক্যাগের রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প খাতে বাংলায় পাঠানো কেন্দ্রের কোটি কোটি টাকার কোনও হিসাব নেই। একটি হিসাব তুলে ধকে মামলাকারীরা দাবি করেন, গত কয়েকটি অর্থবর্ষে বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারের ঘর থেকে যে টাকা রাজ্য সরকারের ভাণ্ডারে এসেছে, তার মধ্যে ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৯৯ কোটি টাকার হিসাব জমা পড়েনি।
এই মামলায় সিবিআই তদন্তেরও আবেদন জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, জনগণের স্বার্থে যে টাকা পাঠানো হয়েছে, তা লুট করা হয়েছে। তাই অবিলম্বে তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি মামলাটির শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে। এর আগে রাজ্যকে দেওয়া কেন্দ্রের অর্থ অন্য খাতে খরচ করা নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
জনস্বার্থ মামলাতেও মামলাকারীরা জানিয়েছেন, হিসাব না দেওয়া টাকার মধ্যে পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন দফতরের ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি রয়েছে। পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্রে দেওয়া অর্থের মধ্যে ৮১ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকার হিসাব দেওয়া হয়নি। শিক্ষাক্ষেত্রেও হিসাব না দেওয়া অর্থের পরিমাণ ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। আগামী ৩০ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।