রেজাউল করিম: সরকারি বাসের চালক রঞ্জিত চৌধুরি যেন মুহূর্তে বিখ্যাত হয়ে উঠলেন। বাসযাত্রীদের কাছে রীতিমতো ত্রাতা হয়ে হাজির হন। তাঁর বিচক্ষণতায় রক্ষা পেল যাত্রীবোঝাই সরকারি বাস। রক্ষা পেলেন জনবহুল কালিয়াচক চৌরঙ্গি মোড়ে পথচলতি মানুষও। ব্রেক ফেল করা বাসকে নিয়ে চালক রঞ্জিত চৌধুরি যেভাবে উপস্থিত বুদ্ধিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ডিভাইডার ঘেঁষে দাঁড় করান, তাতে বাহবা দিয়েছেন ওই সরকারি বাসের যাত্রী থেকে পথচলতি মানুষও।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার বাসটি এদিন ৫৫ জন যাত্রী নিয়ে রায়গঞ্জ থেকে মালদা শহর হয়ে ফরাক্কার দিকে যাচ্ছিল। কালিয়াচকের বালিয়াডাঙ্গা মোড় পার করার পর বাসের ব্রেকের পাইপ ফেটে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। ব্রেকের পাইপ ফেটে যাওয়ার ফলে ব্রেক ফেল হয়ে যায়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় ড্রাইবার মনের জোর ও উপস্থিত বুদ্ধিতে একের পর এক জাতীয় সড়কের ডিভাইডারের গার্ড ওয়ালে কয়েকবার ধাক্কা মারার পর বাসটি দাঁড় করাতে সক্ষম হন। এদিকে ড্রাইভার এর কাছ থেকে ব্রেক ফেল হওয়ার কথা শুনে বাসে থাকা যাত্রী সাধারণ অনেকেই কান্নাকাটি ও হইচই শুরু হয়ে যায়।
যাত্রীরা আতঙ্কে কেউ আল্লার কাছে দোয়া, কেউ ভগবানের কাছে প্রার্থনা করতে থাকেন। ডিভাইডারের গার্ড ওয়াল ঘেঁষে বাস দাঁড় হওয়ার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন যাত্রীরা। সবাই সুরক্ষিত থাকেন। কারোর আঘাতের ঘটনার মতো কিছুই ঘটে নি। চালকের দক্ষতায় খুশি সকলে। যাত্রীদের মধ্যে বলরাম হালদার, মাহিদুর রহমান জানান, ‘আমি মালদা শহর থেকে ফরাক্কায় আসছিলাম। বালিয়াডাঙ্গার কাছে ব্রেক ফেল করে। আমি চালকের কাছাকাছি আসনে বসেছিলাম। আতঙ্কে প্রাণ ওষ্টাগত হয়ে উঠেছিল। চালকের বুদ্ধিতে আমরা প্রাণ ফিরে পেয়েছি। চালকে ধন্যবাদ জানাই।
রবিবার বলে রাস্তার উপর যানবাহন ও যাত্রী কম ছিল। ’ এদিনের হিরো চালক রঞ্জিত চৌধুরি জানান, ‘জীবনে প্রথম এই ধরনের ঘটনা ঘটল। রায়গঞ্জ থেকে ফারাক্কা আসছিলাম। ৫৫ জন যাত্রী ছিলেন। আচমকা ব্রেক পাইপ ফেটে যাওয়ার শব্দ পাই। তারপর ব্রেকে পা দিয়ে দেখি ব্রেক ফেল হয়েছে। এরপর মাথা ঠান্ডা রেখে ডিভাইডার ঘেঁষে ধাক্কা মারতে মারতে গাড়ি দাঁড় করাই। আরেকটু এগোলেই ব্যস্ততম কালিয়াচক চৌরঙ্গি মোড়। তার আগেই গাড়িটি দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছি। ভগবানকে অশেষ ধন্যবাদ।’ ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।