পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে উঠে পাশ্ব শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত মামলা। রাজ্যে পার্শ্ব-শিক্ষকদের বেতন গ্রুপ-সি ও ডি কর্মীদের থেকেও কম। এই অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে।
এই মামলার শুনানিতে সর্বশিক্ষা মিশন, কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের থেকেও শিক্ষকদের বেতন কম কেন? এদিন এই প্রশ্নই তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। পার্শ্ব-শিক্ষকদের বেতন বাবদ কেন্দ্র কত টাকা দেয় ? রাজ্যই বা কত টাকা দেয় পার্শ্ব-শিক্ষকদের ? কেন্দ্র ও রাজ্যকে হলফনামায় তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের মাধ্যমে পার্শ্ব-শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয় বিভিন্ন স্কুলে। এই প্রকল্পে অন্যান্য রাজ্যে পার্শ্ব-শিক্ষকরা অনেক বেশি বেতন পাচ্ছেন। কিন্তু, বাংলার ক্ষেত্রে একজন পার্শ্ব-শিক্ষকের বেতনের পরিমাণ বাইরের রাজ্যের থেকে অনেকটাই কম বলে অভিযোগ। আর সেই নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।
উল্লেখ্য, পার্শ্ব-শিক্ষকদের বেতনের ৬০ শতাংশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি ৪০ শতাংশ দেয় রাজ্য। কেন্দ্রের আইনজীবী এদিন আদালতে দাবি করেন, -‘তাদের তরফ সমস্ত টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও বেতন কম পাচ্ছেন পার্শ্ব-শিক্ষকরা’ ।
এ নিয়ে সর্বশিক্ষা মিশনের আইনজীবীর প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করে সিঙ্গেল বেঞ্চ। বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু তাঁর পর্যবেক্ষণে এদিন জানান, “আপনার দেওয়া তথ্যের জাস্টিফিকেশন চাইছি। এটাই ফ্যাক্ট। সঠিক ও স্বচ্ছ তথ্য প্রদান করুন ।”
মামলাকারির আইনজীবীর দাবি, -‘ একজন শিক্ষক-শিক্ষিকার থেকে একজন গ্রুপ-ডি কর্মচারীর বেতন বেশি। এটা মানা সম্ভব না।রাজ্যে অশিক্ষক কর্মীদের থেকেও কম বেতন পাচ্ছেন পার্শ্ব-শিক্ষকরা’ । শুক্রবার আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, ”শিক্ষক হয়েও এত কম বেতন কেন ?” এদিনকার শুনানিতে রাজ্য জানায়, -‘সর্বশিক্ষা মিশনের খাতে কেন্দ্র যে ৬০ শতাংশ টাকা দেয়, তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে’ । তাঁর যুক্তি সেই কারণেই নাকি বেতনের এই বৈষম্য।
পালটা সওয়ালে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, ”কেন্দ্র বরাদ্দ কমালেও, যে টাকা রাজ্যে আসছে তার মধ্যে থেকেই বেতনে সমতা বজায় রাখতে পারে সরকার” । সব তরফে সওয়াল জবাব শেষে বিচারপতি কেন্দ্র, সর্বশিক্ষা মিশন এবং রাজ্যকে এই বৈষ্যমের কারণ এবং কত টাকা কেন্দ্র ও রাজ্য বরাদ্দ করে ? সে সব তথ্য-সহ হলফনামা আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন । আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি । রাজ্যে অশিক্ষক কর্মীদের থেকেও কম বেতন পাচ্ছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। শিক্ষাদান করেও এত কম বেতন কেন, এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দায়ের হয়েছিল মামলা। সেই মামলাতেই এদিন তাত্পর্যপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুও। অন্য রাজ্যে পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন বেশি হলেও এই রাজ্যে কম কেন, তা জানতে চান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ।