পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের হিংসা সংক্রান্ত মামলার জরুরি শুনানি চলে। গত সোমবার রাতে নতুন করে অশান্তি ছড়ায় হুগলির রিষড়ায়। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনায় আজ অর্থাৎ বুধবারের মধ্যে রাজ্য সরকারের জবাব তলব করা হয়েছে । হুগলির রিষড়ায় নতুন করে অশান্তির ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে রিষড়ায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। মঙ্গলবার সেই ঘটনা আদালতে নজরে আনেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী। বিষয়টিতে আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়।সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার উপরোক্ত নির্দেশটি দেয় কলকাতা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি, এই ঘটনায় শুভেন্দু অধিকারীকেও একটি অন্তর্বর্তী হলফনামা পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গত সোমবার রাতে রিষড়ার ৪ নম্বর রেলগেটের কাছে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে।যার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। হাওড়া-বর্ধমান মেইন লাইনে ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়।
বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী। সবকিছু শোনার পর রাজ্যকে আদালত নির্দেশ দেয়, নতুন করে হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় অতিরিক্ত হলফনামা আদালতে জমা করতে হবে।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় একটি জনস্বার্থ মামলাও রুজু করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলার শুনানি হবে বুধবার। আর ওই দিনই রাজ্যকে তার রিপোর্ট আদালতে জমা করতে হবে।
উল্লেখ্য, রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে গত রবিবার অশান্তি ছড়িয়েছিল হুগলির রিষড়ায়।সেই ঘটনায় বিজেপির পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ-সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। রবিবারের ওই ঘটনার পর থেকেই থমথমে ছিল গোটা এলাকা। মোতায়েন ছিল পুলিশ। বেশ কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা কার্যকর করা হয়েছিল। এমনকী, ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছিল। যদিও তার মধ্যেই এলাকায় ঢোকা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে বিবাদ চলে। আর সেই প্রেক্ষাপটেই গত সোমবার রাতে নতুন করে হিংসা ছড়ায়।হুগলির এই অশান্তির আগে গত বৃহস্পতিবার হাওড়ার শিবপুরেও রামনবমীর শোভাযাত্রা চলাকালীন সংঘর্ষ বাধে। অশান্তির জেরে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকায়। সোমবার সেই ঘটনাতেও রাজ্য সরকারের জবাব তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। শিবপুর সংক্রান্ত সেই রিপোর্টটিও রাজ্যকে ৫ এপ্রিল আদালতে পেশ করতে হবে। শিবপুরে কীভাবে ঘটনা ঘটেছিল এবং পরবর্তীতে তার প্রেক্ষিতে প্রশাসন কী কী পদক্ষেপ করেছে, সেই সবকিছুই আদালতে জানাতে হবে রাজ্যকে।
সেইসঙ্গে, ঘটনার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজও আদালতে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অশান্তির পুনরাবৃত্তি এড়াতে সংশ্লিষ্ট সমস্ত জায়গায় যথাযথ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হবে বলে জানা গেছে ।