পারিজাত মোল্লা: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণের সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা, অন্যান্য মন্ত্রীবর্গ, পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের অন্যান্য বিচারপতিরা, এর পাশাপাশি কয়েকজন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সর্বপরি আইনজীবীরা ছিলেন এই শপথ গ্রহণে।
গত ১ মে কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী প্রধান বিচারপতি হন টি এস শিবজ্ঞানম। গত মাসে বিচারপতি শিবজ্ঞানমের নাম চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সুপারিশ কার্যকর করে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক। প্রধান বিচারপতি পদে প্রকাশ শ্রীবাস্তব অবসর গ্রহণের পর থেকেই সবথেকে সিনিয়র বিচারপতি শিবজ্ঞানম ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা হাইকোর্টের নতুন প্রধান বিচারপতি হিসাবে বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের নাম সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। এরপর ৩০ মার্চ বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর সেই পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পান টিএস শিবজ্ঞানম। গত ১ লা মে আইন মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় যে তাঁকে স্থায়ী প্রধান বিচারপতি পদে নিযুক্ত করা হচ্ছে। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত তাঁর শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান নানা কারণে সম্পন্ন হয়নি। এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সাড়ে দশটার দিকে তা সম্পূর্ণ হলো। গত ১৯৮৬ সালে বিচারপতি শিবজ্ঞানাম মাদ্রাজ বার অ্যাসোসিয়েশনে নাম নথিভুক্ত করে আইনজীবী হিসাবে প্র্যাক্টিস শুরু করেন। ২০০৯ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। ২০২১ সালে সেখানকার স্থায়ী বিচারপতি হন। ওই বছরই তাঁকে কলকাতা হাইকোর্টে বদলি করা হয়। টিএস শিবজ্ঞানম ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব অবসর গ্রহণের পর কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন।এদিন তিনি স্থায়ী প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন।
এদিনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম-সহ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের একাধিক বিচারপতি, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা।
এদিন প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথগ্রহণের বক্তৃতায় তিনি উল্লেখ করলেন, “এই রাজ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমি, সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ এই রাজ্যের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথগ্রহণ করে গর্ব অনুভব করছি। আশাকরি কলকাতা হাইকোর্ট বারের সহযোগিতা পাব। আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি যেন সুবিচার করতে পারি।”।