পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ কর্নাটক সরকার রাজ্যের বেসরকারি এবং সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠরত মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্ক তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিল। রাজ্যের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ এই খবর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন– যেসব মুসলিম ছাত্রছাত্রী প্রথম থেকে দশম শ্রেণির মধ্যে পড়াশোনা করছে– তাদের সকলের তথ্য সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন– সংবাদমাধ্যম সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। প্রত্যেক দিন সংবাদমাধ্যম কত ছাত্রীকে স্কুল– কলেজ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে। আমরা সংবাদমাধ্যমকে জানাতে চাই– কতজন মুসলিম ছাত্রী এইসব বিতর্কে মাথা না গলিয়ে নিয়মিত ক্লাস করছে। তার জবাব দিতেই এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ অফিসার বললেন– এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে আদালতে এবং বিধানসভায় জবাব দেওয়ার জন্য। আদালতে মামলা চলছে।
আদালত যে কোনও সময়ে তথ্য চাইতে পারে। বিধানসভাতেও বিরোধীরা তথ্য চাইতে পারেন। সেই কারণে তা হাতে মজুদ রাখা হবে। অন্যদিকে– এক বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বলেছেন– এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে যেসব কলেজে মুসলিম ছাত্রী বেশি সেই কলেজের এলাকাকে স্পর্শকাতর অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে উপযুক্ত পুলিশি পাহারা রাখা হবে। তবে ভারতের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা আইন অনুযায়ী– এবাবে তথ্য সংগ্রহ করা যায় না। বেছে বেছে শুধু মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের তথ্য সংগ্রহের অর্থ তাদের গোপনীয়তায় আঘাত। অন্তত সমাজতাত্ত্বিকরা তাই মনে করেন। ‘ডেকান হেরাল্ড’-এর সাংবাদিককে শিক্ষামন্ত্রী যে তথ্য সংগ্রহের বিবরণ দিয়েছেন তাতে দেখা যাচ্ছে– ১৬২ জন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার জন্য বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মোদ্দা কথা হল– মুসলিম ছাত্রীদের পড়াশোনার প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে এই সবের কারণে। এর আগে ৬ প্রতিবাদী মুসলিম ছাত্রীর বিশদ তথ্য– বাড়ির ঠিকানা– ফোন নম্বর-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন এক বিজেপি নেতা। যাতে উগ্র হিrদুত্ববাদী নেতারা ওদের সন্ত্রস্ত করতে পারে। সেই কারণেই অনেকের প্রশ্ন– নতুন করে রাজ্যজুড়ে যে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে সেইসব তথ্য আবার ছড়িয়ে দেওয়া হবে না তো? কর্নাটকের কিছু স্কুল– কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করায় তা আন্তর্জাতিক পরিধিতে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও চলছে।