পুবের কলম প্রতিবেদক: ফিরহাদেই আস্থা মমতার, পাঠাচ্ছেন মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুনতে। সেই তাঁর ওপরেই নিজের বজায় রাখলেন বাংলার অগ্নিকন্যা তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ফিরহাদ হাকিম। মমতা এবার তাঁকেই পাঠাচ্ছেন বাংলার জেলায় জেলায় মানুষের অভাব-অভিযোগ, ক্ষোভ-বিক্ষোভ, চাহিদা-দাবি এইসব শুনতে। প্রথম দফায় ফিরহাদ যাবেন বাংলার ৪টি জেলায়।
রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত উত্তর দিনাজপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদ এবং সংখ্যালঘু প্রভাবিত বীরভূম জেলায় যাচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম।
ফিরহাদ দীর্ঘদিন মমতার সঙ্গী। মমতা যখন কংগ্রেসে ছিলেন তখনও ফিরহাদ তাঁর পাশে থাকতেন।
মমতা যখন তৃণমূল গড়লেন তখনও তাঁর পাশে থেকেছেন ফিরহাদ। দলের ওঠাপড়ে দেখেছেন মমতার পাশে দাঁড়িয়ে। অনেকেই দলের দুর্দিনে দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। দল নিয়ে অনেক বাজে কথা বলেছেন তাঁরা। মমতাকে নিয়েও কুকথা বলতে ছাড়েননি তাঁরা।
ফিরহাদ এসবই দেখেছেন শুনেছেন মমতার পাশে থেকেই। কোনও দিনের জন্য তৃণমূলকে নিয়ে একটি খারাপ শব্দ ব্যবহার করেননি। মমতা আজও তাঁর ধ্যানজ্ঞান। তৃণমূলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান অনেক সময়েই নানা জল্পনার জন্ম দিয়েছে।
কিছুদিন আগেই কলকাতা পুরনিগমের পার্কিং ফি বৃদ্ধি এবং তা প্রত্যাহার নিয়েও অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে ফিরহাদ হাকিমকে। কিন্তু তাঁর ওপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অগাধ আস্থা যে এখনও রয়েছে তা নিত্যদিনই দেখতে পাওয়া যায়। ফিরহাদের সব থেকে বড় পরিচয় তিনি সংখ্যালঘু সমাজের মানুষ হয়েও কোনওদিন নিজেকে সংখ্যালঘু নেতা হিসাবে তুলে ধরতে চাননি। তাই চেতলা অগ্রণীর দুর্গাপুজোর হোতা তিনি। গ্রাম বাংলা থেকে শহুরে জনতার কাছে তিনি তাই তৃণমূলের অন্যতম স্তম্ভ। ভরসারও। সেই ভরসা তাঁর ওপর রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলার সংখ্যালঘু সমাজে ফিরহাদের গ্রহণযোগ্যতা অসীম। ফিরহাদ আসলে কোনওদিন চেষ্টাই করেননি মুসলিম সমাজের নেতা হয়ে উঠতে। তাই তিনি হিন্দুদেরও নেতা, মুসলিমদেরও নেতা, শিখদেরও নেতা, বৌদ্ধদেরও নেতা। খ্রীষ্টানদেরও নেতা, জৈনদেরও নেতা। তৃণমূলের মধ্যে একমাত্র ফিরহাদই রয়েছে যিনি মুসলিম সমাজের মধ্যে থেকে এসেও মুসলিম নেতা হয়ে ওঠেননি।
হয়ে উঠেছেন আমজনতার নেতা। সেটা বুঝেই আমজনতার ক্ষোভ-বিক্ষোভ, অভাব-অভিযোগ, দাবিদাওয়ার কথা শুনতে মমতা ফিরহাদকেই পাঠাচ্ছেন গ্রাম বাংলার বুকে। শুরু হচ্ছে তাঁর সেই ‘জনসম্পর্ক অভিযান’।
ভুললে চলবে না এদিন থেকেই অভিষেক বন্ধ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘জনসংযোগ যাত্রা’ শুরু করতে চলেছেন কোচবিহার থেকে। এর পাশাপাশিই কিন্তু চলবে ফিরহাদের ‘জনসম্পর্ক অভিযান’।