বিশেষ প্রতিবেদকঃ এক অবিশ্বাস্য– অকল্পনীয় ঘটনা। পাথরের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। কিন্তু সেই আগুন কখনও বিধ্বংসী চেহারা ধারণ করেনি। বিগত কয়েকশো বছর ধরে এভাবেই দিনরাত জ্বলে চলেছে এই আগুন।
যে আগুনে আরও কোনওদিন ক্ষতি হয়নি। আর এই কারণেই আগুনটি হয়ে গেছে অলৌকিক ও ভক্তির। মানুষের বিশ্বাস এই আগুনের ওম নিতেন মনোষ্কামনা পূর্ণ হয়। তাই প্রতিদিন শত শত মানুষ ছুটে যান। ইতিমধ্যে সেটি পবিত্র স্থান হিসেবে স্বীকৃত হয়ে গেছে।
অবিশ্বাস্য এই ঘটনাটি ঘটে চলেছে অসমের হাইলাকান্দি জেলার পাঁচ গ্রাম পেপার মিল সংলগ্ন দোকান পাহাড় টিলায়। প্রায় ৫০০ সিঁড়ি টপকে উঠতে হয় ওই ‘অলৌকিক কাণ্ড’ দেখতে।
স্থানীয় মানুষদের মধ্যে একটি কাহিনি প্রচলিত রয়েছে ওই স্থানটি নিয়ে। আনুমানিক ৮০০ বছর আগে এই টিলায় বহুদিন ধরে আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য অবস্থান করেছিলেন হযরত শাহ মীর-এ অরিফিন নামে একজন পীর। তাঁর সান্নিধ্য পেতে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বহু মানুষ সেখানে ছুটে যেতেন। তাঁর দোওয়া আশীর্বাদ নিতেন। পীর আরিফিন ক্রমে হয়ে ওঠেন বহু মানুষের আস্থাভাজন। একদিন পীর সাহেব ওই স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যান। কিন্তু মানুষের বিশ্বাস তাঁর অলৌকিক ক্ষমতার জন্যই তাঁর প্রস্থানের পর থেকে সেখানে পাথরের ভেতর থেকে আগুন জ্বলতে থাকে। সেই বিশ্বাস থেকে এখনও প্রতিদিন বহু মানুষ ছুটে যান উঁচু পাহাড়ের ওই পীরের সাধনক্ষেত্রে। পরবর্তীকালে পাথরে আগুন জ্বলা নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলেও কোনও সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেউ কেুউ বলেন– মাটির গভীরে গ্যাসের ভান্ডার থেকেও আগুন জ্বলতে পারে। কিন্তু বিশ্বাসী মানুষদের নিরাশ করা সম্ভব হয়নি। জায়গাটি হয়ে উঠেছে পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ। পাহাড়ের উপর সরকারের তরফ থেকে একটি বিশ্রামাগার ও সিড়ি নির্মাণ করা হলেও এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। এলাকার বহু মুসলিম মিলে এখন বিদ্যুতের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।