পুবের কলম প্রতিবেদক: ‘যে দেশগুলি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিতে আদালতে যায় তারা আমাদের জ্ঞান দেয় কিভাবে’, পশ্চিমা মিডিয়াকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের নির্বাচনের নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরার জন্য পশ্চিমা মিডিয়াকে তিরস্কার করে তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফলের জন্য আদালতে যেতে হবে, এমন পরামর্শ দিয়ে দেশগুলি নিজেদের মধ্যেই বিড়ম্বনা বাড়িয়ে তুলছে। বুধবার বাংলায় নিজের বইয়ের বাংলা সংস্করণ প্রকাশ করতে কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জয়শঙ্কর পশ্চিমা মিডিয়াগুলিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। বিদেশমন্ত্রী বলেন, বিগত ২০০ বছর ধরে পশ্চিমী দেশগুলি গোটা বিশ্বকে জ্ঞান দিয়ে চলেছে। ২০০ বছর ধরে পশ্চিমী দুনিয়ার জ্ঞানে ভারতবর্ষ যখন নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে না, সেই সময় দিল্লির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে।
খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর ইস্যুতে সম্প্রতি সুর চড়ায় কানাডা। কানাডার মাটিতে নিজ্জর খুনে ভারতের হাত রয়েছে বলে তোপ দাগে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সেই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দেয় ভারত। শুধু এখানেই শেষ নয়, এরপর খালিস্তানি জঙ্গি গুরপতওয়াত সিং পান্নুনকে আমেরিকার মাটিতে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে তোপ দাগা হয় ওয়াশিংটনের তরফে। পাশাপাশি পান্নুনের খুনের চক্রান্ত রুখে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে আমেরিকা। শুধু তাই নয়, পান্নুন খুনের প্লটে ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তা জড়িত বলে দাবি করে আমেরিকা।
এই অভিযোগও তৎক্ষণাৎ নস্যাৎ করে দেওয়া হয় দিল্লির সরকারের তরফে। খালিস্তানি ইস্যুতে আমেরিকা এবং কানাডা বারংবার ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়ালে, সেই ঘটনাকে পশ্চিমী বিশ্বের পুরনো অভ্যেস বলেই কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এখানেই থেমে থাকেননি বিদেশমন্ত্রী, মতামত প্রকাশ করে গোটা বিশ্বকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা পশ্চিমী বিশ্বের পুরনো অভ্যেস বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জয়শঙ্কর তীব্র শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলি মনে করছে তারা ২০০ বছর ধরে প্রভাব খাটাচ্ছে তারা। আসলে পুরনো অভ্যাস যাবে কোথায়?
জয়শঙ্কর এখানে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পশ্চিমা মিডিয়ার মতাদর্শ ভারতের মতাদর্শের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই সংবাদপত্রগুলো ভারতের প্রতি এত নেতিবাচক কেন? আসলে ওরা চায় (পশ্চিমা) ওদের সংস্কৃতি, ভাবাদর্শ অন্যান্য দেশের ওপর চাপিয়ে দিতে। সেই আদর্শের মানুষই দেশগুলিকে শাসন করুক, আর যখন সেটি তারা করতে পারে না, সেখানে তারা খুব বিরক্ত বোধ করে।