পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: চাল রফতানির নিষেধাজ্ঞা একটি নির্দেশিকা। কোনও বিধিনিষেধ নয়। বিশ্বের ১.৪ বিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কৃষি প্যানেলকে এমনটাই জানাল ভারত সরকার। চাল রফাতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে ২৭শে সেপ্টেম্বর জেনেভায় ডব্লিউটিওর কৃষি বিষয়ক কমিটির বৈঠকে মার্কিন সহ দেশগুলির প্রশ্নোত্তরে একথা জানিয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্টস লিমিটেড (এনসিইএল)-এর মাধ্যমে ভুটান (৭৯,০০০ টন), সংযুক্ত আরব আমিরাত (৭৫,০০০ টন), মরিশাস (১৪,০০০ টন) এবং সিঙ্গাপুরে (৫০,০০০ টন) নন-বাসমতি চাল রফতানির অনুমতি দিয়েছে।
দেশে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ও আসন্ন উত্সব মরসুমে খুচরা দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নন-বাসমতি সাদা চালের রফতানিতে শর্তসাপেক্ষ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল ভারত। যদিও খাদ্য নিরাপত্তাহীন, দুর্বল দেশ এবং প্রতিবেশী দেশগুলির জন্য পর্যাপ্ত চাল ও গম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। উল্লেখ্য, বাসমতী বাদে আর কোনও চাল রফতানি করা যাবে না, ভারত সরকার গত জুলাই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র সরকার। এর ফলে বিশ্বের বহু দেশেই চালের জোগান নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় চাল মিলবে না জানার পর আমেরিকার শহরগুলিতে মানুষ মুদি দোকানে ছুটেছে চাল কিনতে। চালের কাউন্টারে লম্বা ভিড়। আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপের দেশগুলিতেও ভারতীয় চালের বেশ কদর। সর্বত্রই চাল সংগ্রহ করে রাখার হিড়িক পড়েছে। কারণ, ভারতীয় চালের জোগান ভাল, দামও নাগালের মধ্যে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য দেশগুলির একটি দল অ-বাসমতি চাল রফতানি নিষিদ্ধ করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জানিয়েছে, ভারতের এই সিদ্ধান্ত আমদানি নির্ভর দেশগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে। অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য ভারতকে আর্জি জানিয়েছেন তারা।
বিশ্বের মধ্যে চাল রফতানিতে ভারত এখন পয়লা নম্বর স্থানে আছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। কিন্তু গুণমানের দিক থেকে থাই ও ভিয়েতনামের চালের তুলনায় ভারতীয় চালের চাহিদা বেশি।
সরকারি সূত্রের খবর, নয়া দিল্লির সিদ্ধান্তের জেরে বিশ্বের চল্লিশটি দেশ সমস্যায় পড়েছে। সেখানে চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত বছর ভারত গম রফতানি বন্ধ করেছিল। আমেরিকার চাপের মুখে সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয় বলে বিভিন্ন মহলের খবর।
আসলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমেরিকাতেও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনের গম মার্কিন মুলুকে যাচ্ছে না। কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া ইউক্রেনের জাহাজ চলাচলে বাধা তৈরি করায় আমদানি-রফতানি বিপুল ভাবে মার খাচ্ছে। গত ঈদের সময় বাংলাদেশ বেশি দাম দিয়ে কানাডা থেকে গম আমদানি করে।