পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ বিশ্বব্যাপী মৃত্যু এবং রোগের বাড়বাড়ন্তের মূল কারণ। সম্প্রতি এমনই একটি তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- (‘হু’)। সোডিয়াম খাওয়ার পরিমাণ হ্রাস সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণ ৩০ শতাংশ হ্রাস করার লক্ষ্য ঠিক করেছে হু।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী নুন খাওয়া কমালে তা আগামী ৭ বছরে অন্তত ৭ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু রুখে দিতে পারে!
সোডিয়াম শরীরের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টির মধ্যে অন্যতম। তবে কোনও জিনিসের অতিরিক্ত গ্রহণ আমাদের শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলে। ঠিক তেমনই অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ হৃদরোগ, স্ট্রোক, অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। খাবার লবণ মানে সোডিয়াম ক্লোরাইডই সোডিয়ামের প্রধান উৎস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোডিয়াম হ্রাস নীতিগুলি বাস্তবায়িত হলে তা ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৭ মিলিয়ন মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে। তবে সোডিয়াম গ্রহণ কমাতে প্রস্তাবিত নীতিগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বিশ্বের মাত্র ৯ টি দেশ। ব্রাজিল, চিলি, চেক প্রজাতন্ত্র, লিথুয়ানিয়া,মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, সউদি আরব, স্পেন এবং উরুগুয়ে। বিশ্বব্যাপী গড় লবণ গ্রহণের পরিমাণ প্রতিদিন ১০.৮ গ্রাম। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতিদিন ৫ গ্রামের কম নুন খাওয়া উচিত।
এই প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর-জেনারেল ডঃ ট্রেডাস আধানাম ঘেব্রেয়েয়াস বলেছেন, “অস্বাস্থ্যকর খাবার বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ও রোগের একটি প্রধান কারণ। এবং অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ অন্যতম প্রধান অপরাধী।
তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ দেশ এখনও সোডিয়াম হ্রাস নীতি গ্রহণ করেনি। ফলে সেই দেশের জনগন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। হু বিশ্বের সমস্ত দেশকেই সোডিয়াম হ্রাস নীতি গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। এর পাশাপাশি খাদ্য প্রস্তুত কারকদেরও খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে।
সোডিয়াম কমাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চারটি নীতি
কম লবণ গ্রহণ করা। খাবার তৈরি করার সময় অতিরিক্ত লবণের ব্যবহার কমানো।
হাসপাতাল, স্কুল, কর্মক্ষেত্র এবং নার্সিং হোমের মতো সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে লবণ বা সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার সীমিত করতে হবে। ফ্রন্ট-অফ-প্যাকেজ লেবেলিং যা ভোক্তাদের সোডিয়াম কম পণ্য নির্বাচন করতে সাহায্য করে।
সোডিয়াম কমানোর কথা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক হারে প্রচার করতে হবে।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার, স্থূলতা, অস্টিওপরোসিস এবং কিডনি রোগের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার ঝুঁকির সঙ্গে উচ্চ সোডিয়াম গ্রহণের সম্পর্ক রয়েছে বলেই জানিয়েছে একদল বিশেষজ্ঞ।