পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক : পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে যাঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করে সদ্য অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা সবাই ভোটে পরাজিত হয়েছেন। বিপরীতে যেসব প্রার্থী ইমরানের দল পাকিস্তান পিটিআই-এর প্রতি অনুগত ছিলেন, তাঁরা সবাই জিতেছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ইমরান অনুগতরা ক্ষমতাসীনদের সকল বাধা উপেক্ষা করে প্রতাপশালী প্রার্থীদের পরাজিত করেছেন। অন্যদিকে, ইমরানের অনুগত অপেক্ষাকৃত নবীশ প্রার্থীরাও নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
ইমরান খানের দল পিটিআইকে সদ্য অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদের নির্বাচনের বাইরে রাখতে প্রায় সব ধরনের চেষ্টাই করেছে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীনরা। ইমরান খানকে বিভিন্ন মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে, পিটিআই-এর দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাঁর দলকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তারপরও ইমরান খানের দল ও প্রার্থীদের দমানো যায়নি। কিন্তু যাঁরা ইমরানকে ত্যাগ করে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাঁরা সবাই এ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। ইমরানের দুঃসময়ে তাঁকে ছেড়ে যাওয়া নেতাদের অন্যতম পারভেজ খট্টক। খাইবার-পাখতুনখাওয়ার প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের আগে পিটিআই ত্যাগ করে পিটিআই-পার্লামেন্টারিয়ান (পিটিআই-পি) নামের একটি দল গঠন করেন। এরপর জাহাঙ্গির তারিন নামের আরেক রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী পিটিআই ছেড়ে ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি) গঠন করেন।
তিনিও এক সময় ইমরানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এই দুই হেভি ওয়েট প্রার্থীই ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে নিজ নিজ আসনে লজ্জাজনক ভাবে হেরেছেন। তবে তারিনের দল লাহোর থেকে জাতীয় পরিষদের মাত্র দুটি আসনে জিতেছেন। এর একটি আলিম খানের, অন্যটি আওন চৌধুরীর। এ দুটি আসনের জয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
খাইবার-পাখতুনখাওয়ার নওশেরার সাতটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন খট্টকের দুই ছেলে ও এক জামাতা। উভয়েই গোহারা হেরেছেন। বিপরীতে পিটিআই-সমর্থিত একজন তরুণ প্রার্থীর ভূমিধস বিজয় হয়েছে।
এ ছাড়া খট্টকের দলের আরেক হেভি ওয়েট প্রার্থী ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মাহমুদ খান দুটি নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং দু’টিতেই শোচনীয়ভাবে হেরেছেন। এই নির্বাচনে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, জনগণ স্বাধীনভাবে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছে। এই ফলাফলে প্রমাণিত হয়, এই প্রার্থীরা ২০১৩ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরান খানের জন্যই জয় পেয়েছিলেন, ব্যক্তিগত কৃতিত্বের কারণে নয়।