পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ অমরনাথ যাত্রায় বিপর্যয়। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হঠাৎ করে এই বিপর্যয় নেমে আসে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী এই ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে প্রশাসন সূত্রে খবর। কালীমাতা ও অমরনাথ গুহার কাছে হঠাৎ করেই মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বান নেমে আসে বলে জানা গিয়েছে। প্রায় ২৫টি ক্যাম্প ভেসে গেছে বলে জানা গেছে। অমরনাথ ক্যাম্পের কাছেই ১০-১২ হাজার পূণ্যার্থী দাঁড়িয়েছিল। উদ্ধার নেমেছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ। উদ্ধারকাজে এসেছে আইটিবিপির কপ্টার। তবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে উদ্ধার কাজ চালাতে দেরি হচ্ছে। অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিও উদ্ধারে নেমেছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী মৃতদের মধ্যে তিনজন মহিলা। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ হঠাৎ করেই অমরনাথ গুহার কাছের ক্যাম্পে বিপর্যয় নেমে আসে। প্রশাসন সূত্রে আরও খবর, কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টির জন্য এই বিপর্যয় নেমে এসেছে। হঠাৎ করেই জলের স্রোত গুহার কাছে থাকা ক্যাম্পের মধ্যে ঢুকে যায়। অমরনাথ গুহার সামনে থাকা লঙ্গরখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আটকদের উদ্ধারে চপার পাঠানো হয়েছে। ইন্দো টিবেটান সীমান্ত পুলিশবাহিনী হেলিকপ্টার নিয়ে এলাকায় পৌঁছেছে। তারা জানিয়েছে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে অমরনাথের গুহার উপর থেকে হঠাৎ করেই জল নামতে শুরু করে। তার পরই হুরমুরিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে এলাকায়।
পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, তিনি জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী, বিএসএফ, স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকাজে রয়েছে। কেন্দ্রের লক্ষ্য মানুষের জীবন রক্ষা করা। আমরা চাই সকল তীর্যযাত্রীরা সুস্থ থাকুক। কাশ্মীরের আইজিপি জানিয়েছেন, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে অমরনাথ গুহার কাছে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প মধ্যে জল ঢুকে গেছে। ফলে ভেসে গেছে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প। আহতদের বিমানে করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ দুবছর করোনার কারণে অমরনাথ যাত্রা বন্ধ থাকার পর গত ৩০ জুন শুরু হয় এই ধর্মীয় যাত্রা। এবছর তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা বেশি হওয়ার কথা ভেবে পায়ে হেঁটে, ডুলি ছাড়াও এবার চপারের মাধ্যমে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসীমূলক ঘটনা এড়াতে এই ধর্মীয় যাত্রা শুরুর হওয়ার আগে থেকেই একাধিকবার বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ। সেই অবস্থায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা।
কিন্তু ফের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় এই ধর্মীয় তীর্থযাত্রা। বালতাল এবং পহেলগাম উভয় রুটেই খারাপ আবহাওয়ার কারণে, গুহা মন্দিরের দিকে উভয় দিক থেকে তীর্থযাত্রীদের বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ফের আবহাওয়া একটু স্বাভাবিক হতেই ৬ জুলাই ফের অমরনাথ যাত্রা শুরু করা হয়।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে কয়েকদিন ধরেই বিপর্যস্ত জম্মু ও কাশ্মীরের অমরনাথ তীর্থক্ষেত্র। এই পরিস্থিতিতে যাত্রা শুরু হতেই ফের বিপর্যয় নেমে এল।