কৌশিক সালুই, বীরভূম: জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার কয়লা উত্তোলনের প্রক্রিয়া চাক্ষুষ করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছে সংবর্ধিত হলেন। উলুধ্বনি দিয়ে উত্তরীয় পড়িয়ে তাদেরকে বরণ করলেন। চাটাইয়ে বসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে চা খেলেন। শুনলেন তাদের আবদারের কথা। সর্বত ভাবে তাদের পাশে থাকা আশ্বাস দিলেন তারা।
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের কয়লা উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই এলাকা জুড়ে উৎসবের মেজাজ। দূর দূরান্তের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কেন্দ্র পাহাড়ি গ্রামে গিয়ে সে কাজ চাক্ষুষ দেখতে ভিড় সাধারণ মানুষের। পাশাপাশি খনি বিরোধী আন্দোলনকারীরা বৃহত্তর আন্দোলনে হুঁশিয়ারি দিলেও এদিন কাউকেই ওই এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।
একদিন আগেই শুরু হয়েছে কয়লার স্থিতি জনার কাজ প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পাঞ্চলের কেন্দ্র পাহাড়ি গ্রামে।
আর শুক্রবার বীরভূম জেলাশাসক বিধান রায় এবং জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী গ্রামে গিয়ে বিশেষ অতিথির মর্যাদা পেলেন স্থানীয় দের কাছ থেকে। গ্রামের মহিলারা উলুধ্বনি দিয়ে উত্তরীয় পড়িয়ে তাদেরকে বরণ করলেন। জেলার দুই শীর্ষ আমলা এদিন গ্রামবাসীদের সঙ্গে মাটিতে বসে তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়ার কথা শুনলেন। পুনর্বাসন থেকে চাকরি এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে সরাসরি দাবি জানালেন তারা। তাদের এই দাবিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেন জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লার স্থিতি নিরীক্ষণ করার কাজ যে চলছে শুক্রবার সেই প্রথম কূপ খনন এর কাজ শেষ হয়েছে। সেই কূপ থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে সিল আকারে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেটা থেকেই কোন স্তরে কত পরিমান কয়লা বা পাথর আছে তা নিরূপণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভার পক্ষ থেকে বৃহত্তর আন্দোলন এবং অনশন কর্মসূচির হুমকি দেওয়া হলেও এদিন তার ছিটেফোঁটার নমুনা পাওয়া যায়নি। প্রকল্প এলাকা তো দূরের কথা বারোমাসিয়ার ধরণা মঞ্চতেও তাদের দেখা যায়নি।
বিশেষ করে প্রকল্প এলাকার মানুষজন অতি উৎসাহের সঙ্গে কয়লার স্থিতি নিরীক্ষণ কর্মে পুলিশ প্রশাসনকে সহায়তা করায় আন্দোলনকারীরা, পিছু হটতে বাধ্য হন বলে মত স্থানীয়দের। এছাড়াও কয়লা উত্তোলনের প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু হওয়ার খবর চাউর হতেই কেন্দ্র পাহাড়ি গ্রামে গিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজন তা দেখার জন্য ভিড় করতে শুরু করেছে। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “প্রকল্প এলাকার মানুষের উচ্ছ্বাস বলে দিচ্ছে এই কয়লা শিল্প নিয়ে কতটা উৎসাহী তারা’।