শফিকুল ইসলাম ,নদিয়া:উত্তরবঙ্গ যাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা না হয়ে যায় সেই আবেদন আর ডুয়ার্সের শান্তিপ্রিয় মাটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করতে পায়ে হেঁটে জলপাইগুড়ি জেলার বিন্নাগুড়ি থেকে কলকাতার কালীঘাটে যাচ্ছেন শঙ্কর ভট্টাচার্য।
একইসঙ্গে তিনি প্রচার করছেন গত ১১ বছরে রাজ্যের সাধারণ মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যে সমস্ত জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলোর সূচনা করেছেন, তার সফলতার কথা।
পেশায় মুদিখানার দোকানের মালিক বছর ৪৬-এর শঙ্করের বাড়িতে রয়েছেন দুই ছেলে এবং তাঁর স্ত্রী পূর্বালী ভট্টাচার্য। তাঁদের অনুপ্রেরণাতেই গত ১৫ জুন উত্তরবঙ্গের নিজের বিন্নাগুড়ির বাড়ি থেকে হাঁটতে শুরু করেন শঙ্কর। রোজ দিনের বেলায় ২৫-৩০ কিলোমিটার করে হাঁটছেন তিনি। তার লক্ষ্য একুশে জুলায়ের আগেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার।
সেখানে পৌছে শঙ্করবাবু মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে চান ডুয়ার্সের মাটি এবং তাঁর কাছে আবেদন করবেন যাতে কোনও মতেই বাংলা থেকে উত্তরবঙ্গ আলাদা না হয়ে যায়।
শঙ্কর বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাজ দেখে আমি তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত। কিন্তু আমি সক্রিয়ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস দল করি না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে উত্তরবঙ্গের মানুষ বিপুলভাবে উপকৃত হয়েছেন। ডুয়ার্স এলাকায় প্রচুর চা বাগান রয়েছে। সেখানকার চা শ্রমিকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ‘জয় জোহার’ এবং ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্প করেছেন। এছাড়াও তাঁর আমলেই বন্ধ হয়ে যাওয়া একাধিক চা-বাগান নতুন করে খুলেছে। তাঁর এই উদ্যোগের জন্য আমি কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আমি উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স থেকে শুধুমাত্র নিয়ে যাচ্ছি এক হাঁড়ি মাটি। এই মাটি আমি মুখ্যমন্ত্রী হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে আবেদন করতে চাই তিনি যেন কোনও মতেই উত্তরবঙ্গকে বাংলা থেকে বিভাজিত হতে না দেন। কিছু শক্তি এখন এই ভাগ চাইছে।’
শঙ্কর আরও বলেন, ‘গত প্রায় কুড়ি বছর ধরে আমি রোজ সকালবেলা ৯-১০ কিলোমিটার করে হাঁটি। তাই এখন রোজ ২৫-৩০ কিলোমিটার করে হাঁটলেও সেভাবে শারীরিক কোনও সমস্যা হচ্ছে না। শুধু পায়ে কয়েকটি জায়গাতে ফোসকা পড়েছে। কিন্তু ওষুধ ব্যবহার করে সেগুলো বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
শঙ্করবাবুর অনুপস্থিতে বর্তমানে তাঁর বাড়িতে ব্যবসার কাজ দেখছেন স্ত্রী পূর্বালী এবং দুই ছেলে। তিনি বলেন, ‘ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়ি থেকে কলকাতার কালীঘাটের দূরত্ব প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার। পথের মধ্যে আমি যখনই অসুবিধার মধ্যে পড়েছি তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিকরা আমাকে সাহায্য করেছেন। আমার যাত্রাপথে তাঁরাই খাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।’
শনিবার রাতে কৃষ্ণনগর এসে পৌঁছন। সেখান থেকে রানাঘাটের উদ্দেশে রওনা হন। এদিন তিনি রানাঘাটে এসে পৌঁছান। রবিবার রানাঘাটের প্রতীক্ষা হোটেলে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এদিনতিনি রানাঘাট ছেড়ে নদিয়ার হরিণঘাটার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন