পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হওয়া সত্ত্বেও সারারাত বোমাবর্ষণ করে ইসরাইলি সেনা। বৃহস্পতিবার রাতে বোমা বর্ষণে হতাহতদের সঠিক তথ্য সামনে না এলেও গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক সকালে জানায় ৩০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির সাময়িক স্বস্তি পরিণত হয় আতঙ্কে।
শুক্রবার সকাল দেখা হল না বহু মানুষের। সকাল ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি চারদিনের জন্য। থেমে যাওয়ার কথা যুদ্ধ বিমানের গুলি ও বোমা ফেলার ভয়ংকর আওয়াজ। সকাল থেকে আওয়াজ বন্ধ হলেও মিডল ইস্ট মনিটর মিডিয়া জানাচ্ছে রাস্তা আটকে থাকা ইসরাইলি সেনার গুলিতে নিহত হয়েছে দু’জন। তারা শরণার্থীদের উত্তর গাজায় যেতে বাধা দিতে থাকে।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরই মানুষ পাগলের মতো ছুটোছুটি করতে থাকে প্রিয়জনের খোঁজে। বহু মানুষ পরিবার বিচ্ছিন্ন অবস্থায়, বহু মানুষ স্কুলে ক্যাম্পে থেকে প্রিয়জনদের হারিয়েছে। নিহত ও আহতদের তালিকায় তাদের নাম রয়েছে কি না, সে-বিষয়েও অনেকে খোঁজ নিচ্ছেন।
প্রেস টিভি জানিয়েছে, বেশিরভাগ মানুষ উত্তর গাজার দিকে ছুটে আসতে থাকে নিজেদের বাসভবনের ধ্বংসস্তূপ একবার ঘুরে দেখতে চায় সকলে। ইসরাইল শুক্রবার আরবিতে হ্যান্ডবিল ছড়িয়ে আবার জানাচ্ছে, উত্তরে যেন কেউ না যায়। উত্তর এখনও তাদের কাছে যুদ্ধক্ষেত্র। কিন্তু পাগল প্রায় মানুষ ইসরাইলের হুমকি উপেক্ষা করে ছুটে আসছেন গাজায়। ওষুধ ভর্তি ২০টি ট্রাক মিশনের রাফা সীমান্ত পার হওয়ার সময় সীমান্তে সমবেত মানুষ উল্লাসে হাত নাড়তে থাকে, ছবি তুলতে থাকে তারা।
রয়টার জানিয়েছে, একটি ট্রাকের সামনে বড় ব্যানারে লেখা— ‘আমরা আমাদের ফিলিস্তিন ভাই-বোনদের কি ভুলতে পারি।’ ২০০ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী ও ওষুধ নিয়ে শুক্রবার ফিলিস্তিনে আসার কথা। শুক্রবার সকালে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাকের সারি। রেড ক্রস এই ট্রাক নিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলের মিডিয়াও বড় করে দেখাচ্ছে গাজায় প্রবেশ করছে ট্রাকের সারি। ৪৮ দিনের মধ্যে এই প্রথম বিদেশি মিডিয়া প্রবেশ করল গাজায়। বহু মিডিয়ার সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মী নিহত হয়েছেন। এ পর্যন্ত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। অনেক মিডিয়া সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে কয়েক সপ্তাহ। তাই মিডিয়াও ঝাঁপিয়ে পড়েছে চারদিনের যুদ্ধবিরতির এই সিদ্ধান্তে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক সর্বশেষ যে রিপোর্ট জানিয়েছে তাতে ফিলিস্তিনে মৃত্যুর সংখ্যা ১৪,৮৫৮— শুক্রবার জুমার নামাযের আগে পর্যন্ত খবর। আর নিখোঁজ রয়েছে সাত হাজার। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৬ হাজার। নিহতদের মধ্যে শিশু ৬,১৫০, আর মহিলা ৪,০০০-এর বেশি।